সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা (Bengal Post Poll Violance) নিয়ে ফের চিঠি রাষ্ট্রপতিকে। প্রাক্তন আমলাদের পর এবার রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি দিলেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা (Academicians)। অভিযোগ, নির্বাচন পরবর্তী সময় রাজ্যে তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর ‘অকথ্য’ অত্যাচার করা হচ্ছে। হিংসা এড়াতে ঘরছাড়া হয়েছেন বহু মানুষ। হিংসা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না মহিলারাও। চিঠিতে এমনটাই দাবি করেছেন ১০০ জন অধ্যাপক, শিক্ষাবিদরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাষ্ট্রপতির (President) হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো স্মারকলিপিতে ওই শিক্ষাবিদ, অধ্যাপকদের দাবি, “নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের কর্মীরা তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। এই কাজে সহযোগিতা করছে রাজ্য পুলিশ। যার ফলস্বরূপ নির্বিচারে খুন, ধর্ষণ, জমি দখলের মতো ঘটনা ঘটছে বাংলা।” চিঠিতে বলা হয়েছে, “ভোট পরবর্তী সময় ১৬২৭টি নির্মম হিংসার ঘটনা ঘটেছে। আর হিংসার জেরে তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের ১১ হাজার মানুষ ঘরছাড়া।” তাঁরা আরও দাবি করেছেন, শহরতলি এলাকায় ইতিমধ্যে ৫ হাজার বাড়ি ভাঙা হয়েছে। ১৪২ জন মহিলার উপর নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। রাজ্য ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছেন ২ হাজার মানুষ। যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
কারা লিখেছেন এই চিঠি? ১০০ জন শিক্ষাবিদের মধ্যে রয়েছেন রাজস্থান, দিল্লি-সহ একাধিক রাজ্যের বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপকরা। এমনই একজন হলেন দিল্লির মতিলাল নেহরু কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক পুনীত কুমার বলেন, “আমরা পীড়িতদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং তফসিলি কমিশনের দেওয়া তথ্যও আমরা দেখেছি। তাই মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের আবেদন বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়্ন্ত্রণে আপনি হস্তক্ষেপ করুন।”
উল্লেখ্য, ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ উঠছিল। কিন্তু শপথগ্রহণের পরই পরিস্থিতি দক্ষ হাতে সামাল দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিংসা বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করে প্রশাসন। এমনকী, দলমত নির্বিশেষে হিংসায় মৃতদের পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়ায় রাজ্য সরকার। সরকারি চাকরি দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। রাজ্যের এই ভূমিকার প্রশংসা করে কলকাতা হাই কোর্টও। কিন্তু তারপরও এই বিতর্ক থামছে না। এর আগে শতাধিক বিশিষ্টজন একই ইস্যুতে চিঠি দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতিকে। এবার সেই পথে হাঁটলেন অধ্যাপকরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.