সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধীদের অভিযোগকে একেবারে ‘স্টেপ আউট’ করে ছক্কা মারলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বহুদিন ধরেই অভিযোগ, সাম্প্রতিককালে হিংসার ঘটনা ঘটছে উন্নাও, বুলন্দশহরের মতো জায়গায়। তাতে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। কিন্তু সেই অভিযোগ একেবারে মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দাবি করেছেন, “গত দু’বছরে উত্তরপ্রদেশে একটিও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেনি। তাঁর আমলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে নেই হানাহানির ঘটনা।”
২০১৭ সালের মার্চে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন যোগী। ২০১৯ সালের মার্চে দু’বছর পূর্ণ করছে যোগী সরকার। মঙ্গলবার সেই বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আদিত্যনাথ। সেখানেই তিনি উল্লেখ করেন যে, তাঁর রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেনি। একই সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘‘দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ মডেল তৈরি করেছে।”
আদিত্যনাথের দাবি করেন, ২০১৭ সালের আগে এসপি, বিএসপির মতো দলগুলো উত্তরপ্রদেশে মাফিয়া রাজ কায়েম করেছিল। ওই সময়টাকে ‘দুর্নীতির যুগ’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘২০১২ সালে ২২৭টি, ২০১৩তে ২৪৭, ২০১৪তে ২৪২টি, ২০১৫তে ২১৯টি এবং ২০১৬ তে ১০০টি সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল উত্তরপ্রদেশে। কিন্তু, ২০১৭ সালের পর থেকে একটিও সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেনি রাজ্যে।’’ রাজ্যে বহুদিন বাদে শান্তি ফিরে এসেছে বলেও দাবি করেন যোগী আদিত্যনাথ।
দু’বছরে বিজেপির শাসনকালে অ্যাসিড হামলা, অপহরণের মতো ঘটনাও উত্তরপ্রদেশে ঘটেনি বলেই উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এ জন্য রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির কথাই তুলে ধরেছেন যোগী। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার জন্য রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের এই শান্তি বজায় থাকার জন্য ২০১৮ সালে প্রায় ৬৮ বছর পর ‘প্রতিষ্ঠা দিবস’ পালিত হয় রাজ্যে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল থাকার জন্য আগের থেকে বিনিয়োগ অনেকটাই বেড়েছে বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। আর এরমধ্যেই দেড় লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসে গিয়েছে।” অল্প সময়ের মধ্যে তা আরও বাড়বে বলেই আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
তাঁর এই স্বল্প শাসনকালের মধ্যে কোনওরকম অপরাধ বরদাস্ত করা হয়নি বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “প্রায় আট হাজারের বেশি দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিন হাজার সংঘর্ষের ঘটনায় ৭৩ জন অপরাধীর মৃত্যু হয়েছে।” জনকল্যাণকর কাজেও রাজ্যের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।যদিও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বুলন্দশহরের মতো একাধিক ঘটনা গত ২ বছরে ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। সাম্প্রদায়িক হিংসায় সংখ্যালঘুদের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। এসব উদাহরণ তুলে ধরেই, যোগীকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছেন বিরোধীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.