ফাইল ছবি।
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: মামলা চলছে, বলা ভালো ‘ঝুলছে’। এদিকে বছরের পর বছর বিনা বিচারে জেলবন্দী রয়েছেন অভিযুক্ত। দেশের বিচার ব্যবস্থায় এমন নজির ভুরিভুরি। ভিভিআইপি থেকে সাধারণ মানুষ বাদ যাচ্ছেন না কেউই। এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে এবার বড় নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার এক মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া আটকানো যাবে না জামিন।
আর্থিক তছরুপ মামলায় এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দী পরবিন্দর সিং খুরানা নামে এক ব্যক্তি। নিম্ন আদালত থেকে হাই কোর্ট সর্বত্র বার বার জামিনের আবেদন জানিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় শেষ আশা হিসেবে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ওই অভিযুক্ত। সেখানেই হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া এই ধরনের জামিনে স্থগিতাদেশ দিতে পারে না হাই কোর্ট। ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত শীর্ষ আদালত জানায়, গত এক বছর ধরে উনি জেলবন্দী। কোনও উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া এভাবে কাউকে আটকে রাখলে কী বার্তা যাবে মানুষের কাছে? এর পরই হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে অভিযুক্তকে জামিনের নির্দেশ দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৭ জুন আর্থিক তছরুপ মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন খুরানা। এর পর বিশেষ আদালতে তিনি জামিন পেলেও পালটা শীর্ষ আদালত সেই জামিনে স্থগিতাদেশ দেয়। এর পর থেকে এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দী তিনি। এদিন শীর্ষ আদালতে এই মামলা উঠলে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হওয়ার পর বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। যদিও পালটা শীর্ষ আদালত জানায়, এই ধরনের আপত্তি তখনই উঠতে পারে যদি অভিযুক্ত সন্ত্রাসে অভিযুক্ত হয়।
এদিকে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে বিনা বিচারে বছরের পর বছর ধরে জেলবন্দী অসংখ্য অভিযুক্ত। শুধু তাই নয়, এই নির্দেশ আশার আলো দেখাতে পারে জেলবন্দী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও তাঁর সহকর্মী মণিশ সিসোদিয়াকে। আর্থিক তছরুপ মামলার পাশাপাশি আবগারি দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দী এই দুজন। তাঁদের এই বন্দীদশার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.