প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভূমিপুত্র না হলেও মিলবে ভোটাধিকার। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ঐতিহাসিক ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের। বুধবার কেন্দ্রশাসিত প্রদেশটির মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হৃদেশ কুমার জানান, রাজ্যে বসবাসকারী দেশের অন্যপ্রান্তের লোকজনও এবার ভোটাধিকার পাবেন। এদিকে, এই ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রতিবাদে সরব হয়েছে উপত্যকার রাজনৈতিক দলগুলি।
গত মে মাসেই জম্মু ও কাশ্মীরে আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল। তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল, চলতি বছরের শেষের দিকেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে জম্মু ও কাশ্মীরে (Jammu & Kashmir)। দ্রুত নির্বাচনের দাবিও জানাচ্ছিল রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার সমাপ্তি। বিরোধীদের চাপ সত্ত্বেও এই বছর সম্ভবত নির্বাচন হচ্ছে না কেন্দ্রশাসিত এই প্রদেশে। নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের তারিখ প্রায় এক মাস পিছিয়ে দেওয়াতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এহেন সময়ে প্রদেশটির মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হৃদেশ কুমার বলেন, “ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ডোমিসাইল সার্টিফিকেট লাগবে না। জম্মু ও কাশ্মীরে কর্মরত সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানরাও ভোটার তালিকায় নাম লেখাতে পারবেন। এছাড়া, বাইরে থেকে আসা চাকুরিজীবী, পড়ুয়ারাও ভোট দিতে পারবেন।” তিনি আরও জানান, এই নয়া সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ২৫ লক্ষ নতুন নাম ভোটার তালিকায় ঢুকতে চলেছে।
এদিকে, এই ঘোষণার পরই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরেরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি। তাঁদের অভিযোগ, ভিনরাজ্য থেকে ভোটার আমদানি করে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করতেই এই পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে ওমর আবদুল্লা লেখেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের আসল ভোটারদের সমর্থন নিয়ে কি বিজেপি এতটাই অনিশ্চয়তায় ভুগছে যে সিট পেতে বাইরে থেকে ভোটার আনতে হচ্ছে? মানুষকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিলে এই সমস্ত কোনও কিছুই বিজেপির কাজে আসবে না।”
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ হওয়ার পর দেশের আর পাঁচটা রাজ্যের মতোই নিয়ম চালু হয়েছে এখানে। কিন্তু এর ফলে জনবিন্যাস ও রাজ্যের স্বকীয় পরিচয় নষ্ট হবে বলে অভিযোগ পিডিপি তথা ন্যাশনাল কণফারেন্সের মতো আঞ্চলিক দলগুলির। বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ হওয়ার পর প্রভাবশালী মুফতি ও আবদুল্লা পরিবার কার্যত কোণঠাসা। এহেন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের নতুন ঘোষণা ও আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ার ফলে নির্বাচনে কিছুটা লাভবান হবে গরুয়া শিবির। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দু’টির জন্য নয়া ‘ডোমিসাইল’ আইন প্রণয়ন করে কেন্দ্র। এই আইন মেনেই ২০২০ সালে ১২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষকে দেওয়া হয়েছে ডোমিসাইল সার্টিফিকেট। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.