সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দু না হলে প্রবেশ করা যাবে না মন্দিরে। গতকাল, সোমবারই দেরাদুনের (Dehradun) ঘণ্টাঘরের একটি মন্দিরের (Temple) সামনে এক ব্যানার ঘিরে বিতর্ক উসকে উঠেছিল। অবশেষে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ১৫০টি মন্দিরে এমন ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করেছে হিন্দু যুব বাহিনী নামে এক অতি দক্ষিণপন্থী সংগঠন। তাদের দাবি, উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) সমস্ত মন্দিরেই এমন ব্যানার লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। প্রতিটি ব্যানারেই এক বার্তা- ‘এটি হিন্দুদের জন্য পবিত্র স্থান। এখানে অ-হিন্দুদের প্রবেশ নিষেধ।’
এর আগে সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) মন্দিরে ঢুকে জলপান করার জন্য প্রবল মারধর করা হয় এক মুসলিম কিশোরকে। তাকে মন্দিরে দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তার নাম-পরিচয় জানতে চায় এক ব্যক্তি। এর পরই ওই কিশোরকে বেধড়ক মারধর শুরু করে সে। গোটা ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই মন্দিরেও লেখা ছিল ‘অ-হিন্দুদের প্রবেশ নিষেধ’। চাকার্তা রোড, শুদ্ধওয়ালা, প্রেমনগরের অসংখ্য মন্দিরেও এবার একই ব্যানার ঝুলতে দেখা গেল।
উত্তরাখণ্ড পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্ত ব্যানারই খুলে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঘণ্টাঘরের সামনে ঝোলানো ব্যানারটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যানারে যে ব্যক্তির ফোন নম্বর ছিল, তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিকে ‘হিন্দু যুব সমিতি’র উত্তরাখণ্ড সংগঠনের প্রধান গোবিন্দ ওয়াধা ইতিমধ্যেই ওই ব্যানারের প্রসঙ্গে কার্যত হুমকি দিয়ে বলেছেন, ”অ-হিন্দুরা ওই মন্দিরগুলিতে প্রবেশ করলে তাদের ধরে মারা হবে ও পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।” তাঁর সাফ কথা, এই মন্দিরগুলি সনাতন ধর্মের বিশ্বাসীদের জায়গা। গোবিন্দর কথায়, ”অন্য ধর্মের বিশ্বাসীদের মন্দিরে ঢোকার দরকারটা কী? অন্য ধর্মের লোকেরা মন্দিরে আসে স্রেফ বিশ্বাসভঙ্গ করতে ও মহিলাদের নির্যাতন করতে। সেই কারণেই আমরা এমন পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছি আমাদের ধর্মকে বাঁচাতে।”
এই ধরনের হুমকি ও রাতারাতি এমন নিষেধাজ্ঞার ব্যানার ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রসঙ্গত, ‘দেবভূমি’ উত্তরাখণ্ডের মন্দিরগুলিতে দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষই আসেন। তাঁরা বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.