সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজোড়া দারিদ্র দূর করতে তাঁর গবেষণা আজ নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। তবে নোবেলজয়ী মানুষটি কিন্তু শুধু পুঁথির পাতা নিয়েই একাগ্রচিত্তে কাটাননি তাঁর শিক্ষাজীবন। বরং ছিলেন অনেক ডাকাবুকো। বিশ্ববরেণ্য বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে বেশ ভালভাবেই যুক্ত ছিলেন। এমনকী আন্দোলন করে জেলেও গিয়েছেন। তাঁর জীবনের নানা দিকে আলো ফেলতে গিয়ে এমনই তথ্য উঠে আসছে।
শুধু ক্লাসরুমে ঘাড় গুঁজে বসে পড়াশোনা কিংবা মন দিয়ে শিক্ষকের কথা শোনা নয়। সাউথ পয়েন্ট, প্রেসিডেন্সি কলেজের তথাকথিত নিয়মানুবর্তিতার বেড়া ডিঙিয়ে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দেওয়ার পরই ছাত্র রাজনীতিতে হাত পাকান অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে জেলও খেটেছেন। জানা গিয়েছে, ১৯৮৩ সালে জেএনইউ-তে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াকালীন আজকের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের তরফে উপাচার্যকে ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। আর তারপর? একেবারে দেশদ্রোহিতার ধারা প্রয়োগ করে তাঁকে ১০দিন তিহার জেলে আটকে রেখেছিল পুলিশ।
বছর কয়েক আগে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাত্কারে নিজেই এসব কথা গল্পের ছলে জানিয়েছিলেন আজকের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। ঘটনাটা ঠিক কী ছিল? সেসময় জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদের সভাপতিকে বরখাস্ত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারই প্রতিবাদে উপাচার্যকে ঘেরাও করেছিলেন তত্কালীন ছাত্র সংসদের সদস্যরা। যার মধ্যে ছিলেন অভিজিত্ নিজেও। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সোজা তাঁদের তিহার জেলে পাঠানো হয়। এরপর দেশদ্রোহিতার মামলাও রুজু হয়। অভিজিতের কথায়, ‘আমাদের সৌভাগ্য যে কয়েকদিন পর দেশদ্রোহিতার চার্জটি উঠে যাওয়ায় আর জেলে থাকতে হয়নি। ওখানে আমাদের মারধরও করা হয়েছিল।’
সেসময় কংগ্রেস সরকার ছিল কেন্দ্রের ক্ষমতায়। নোবেলজয়ী জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার করতে চাইত। কথায় কথায় ছাত্রদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলত। আর তাঁদের প্রতিবাদ ছিল সেসবের বিরুদ্ধেই। দেশের দারিদ্র নিয়েই যে শুধু চিন্তিত ছিলেন বঙ্গসন্তান অভিজিত্, তা কিন্তু নয়। বরং ছাত্র হিসেবে সমাজজীবনের নৈতিক দিকটিও তাঁকে ভাবিয়ে তুলত। তাই কিছুটা সময়ের জন্য হলেও এভাবে ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন। আজ, জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্যের দিনেও সেকথা ভুলছেন না তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.