নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় ইস্তেহারে ‘ন্যায়’-এর কথা বলে চমক দিয়েছিল কংগ্রেস। ন্যূনতম আয় যোজনার মাধ্যমে দেশের পাঁচ কোটি অতিদরিদ্র পরিবারকে মাসে ৬ হাজার টাকা করে নগদ সরকারি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য তাতেও কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসতে পারেনি।
তবু ভোটের মুখে কংগ্রেসের ‘ন্যায়’ যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছিল। আর এই প্রকল্প যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, তিনি হলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বছরের অর্থনীতিতে নোবেলের জন্য সোমবার যাঁর নাম ঘোষণা করেছে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি, সেই বাঙালি অর্থনীতিবিদ। তিনিই ন্যায়-এর রূপরেখা ঠিক করে দিয়েছিলেন। শুধু নির্বাচনী ইস্তেহার তৈরির সময়েই পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করা নয়, অভিজিৎ দীর্ঘদিন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসাবেও আড়াল থেকে কাজ করে গিয়েছেন বলে কংগ্রেস শিবিরের অন্দর থেকেই শোনা গিয়েছে। মোদি সরকারের নোট বাতিল সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছিলেন এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেছিলেন, “শুরুতে যা অনুমান করা হচ্ছে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় তার থেকে বেশি ক্ষতি হবে।” নিজের গবেষণাপত্রেও একথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি ভারতের অসংগঠিত ক্ষেত্র, যেখানে ভারতীয় শ্রমক্ষেত্রের ৮৫ শতাংশের বেশি লোক রোজগার করে, সেখানেই যে নোট বাতিল সবথেকে বেশি ক্ষতি করবে বলে জানিয়েছিলেন।
সোমবার অভিজিতের নোবেল প্রাপ্তির খবর সামনে আসতেই উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস শিবির। রাহুল তো বটেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীও অভিজিৎকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দীর্ঘ টুইট করেছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও তাঁর পরামর্শে উপকৃত হওয়ার কথা টুইটে জানিয়েছেন। অবশ্য, রাহুল এই সুযোগে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। রাহুল লিখেছেন, “অর্থনীতিতে নোবেল জয়ের জন্য অভিজিৎ বন্দে্যাপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা। তিনি ন্যায়-এর রূপরেখা তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন। যার মধ্যে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং ভারতীয় অর্থব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার ক্ষমতা ছিল। তার বদলে এখন আমাদের কাছে ‘মোদিনমিকস’ রয়েছে। যা অর্থব্যবস্থাকে নষ্ট করে দিচ্ছে এবং দারিদ্র্যকে উৎসাহ দিচ্ছে।”
কংগ্রেসের দলীয় টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও অভিজিতকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। কেজরিওয়ালও টুইটে করেছেন, “অভিজিৎ বন্দে্যাপাধ্যায় পদপ্রদর্শক কাজের জন্য দিল্লির সরকারি স্কুলের লক্ষ লক্ষ শিশু লাভবান হয়েছে। দিল্লি সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে যে সংস্কার করেছে তার মধ্যে একটি চ্যালেঞ্জ সরকারি স্কুলের শ্রেণিকক্ষের প্রশিক্ষণের চেহারা বদলে দিয়েছে। যা তাঁর দ্বারা বিকশিত মডেলের উপর ভিত্তি করেই হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.