Advertisement
Advertisement

প্রথম দু’মাসে কড়া ব্যবস্থা নয়, স্বস্তির বার্তা জেটলির

সরকার যথেষ্ট উদার দৃষ্টিভঙ্গিতেই পরিস্থিতির বিচার করবে, জানালেন অর্থমন্ত্রী।

No stringent action in first two months of GST, says Arun Jaitley
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 1, 2017 4:52 am
  • Updated:August 12, 2021 5:56 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পণ্য পরিষেবা করের আওতায় একাধিক হার রয়েছে। তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্নের মুখে পড়েও সিদ্ধান্তের পক্ষেই সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস—সহ বিরোধীরা পরিকাঠামো ও সরকারি প্রস্তুতি নিয়ে সমালোচনা করেছিল। তাদের বক্তব্য, যথাযোগ্য ব্যবস্থা না নিয়েই তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু করতে চাইছে সরকার। কিন্তু জেটলির আশ্বাস, কর সংস্কারের পর জিএসটি খুব সুষ্ঠুভাবেই চালু হয়ে যাবে। কোথাও কোনও সমস্যা হবে না। তবে ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে জিএসটি পরিকাঠামোয় সড়গড় হতে হয়তো সময় লাগবে। সে ক্ষেত্রে সরকার যথেষ্ট উদার দৃষ্টিভঙ্গিতেই পরিস্থিতির বিচার করবে। অন্তত প্রথম দু’মাস খুব কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেই আশ্বাস দিয়েছেন জেটলি।

শুক্রবার মধ্যরাতে সংসদের বিশেষ অনু্‌ষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, “ভারত থেকে এক নতুন যাত্রাপথের সূচনা হচ্ছে, যা অপরিসীম সম্ভাবনার রাস্তা খুলে দিচ্ছে। সমগ্র দেশের জন্য যে এক দেশ এক কর ব্যবস্থা চালু হচ্ছে সেখানে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি একই লক্ষ্যে কাজ করবে, যা নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।”

Advertisement

[GST-র জের, আরও সস্তায় মিলবে কেএফসি, পিজ্জা]

তার আগে এদিন একটি সংবাদমাধ্যমের বিশেষ অনুষ্ঠানে জেটলি বলেন, “যথেষ্ট ভাবনা—চিন্তা করেই করের বিভিন্ন হার ঠিক করা হয়েছে। মার্সিডিজের মতো বিলাসবহুল গাড়ি ও পায়ে দেওয়ার স্লিপারের উপর একই হারে কর বসানো যায়?”  জিএসটির অন্তর্গত ০, ৩, ৫, ১২, ১৮ ও ২৮ শতাংশ– ছ’টি হারে কর ধার্য করা হয়েছে। তা নিয়ে বিতর্কও চলছে পুরোদমে। অনেকের মতে, ‘এক দেশ, এক কর’—এর যে নীতির কথা বলা হচ্ছে, সরকার নিজেই সেই নিয়ম মানছে না। তবে এত বড় কর সংস্কারের ক্ষেত্রে তাই রাজনীতি না করার আবেদন জানিয়েছেন জেটলি।

তাঁর দাবি, “গত বছর সংবিধান সংশোধন করে জিএসটি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়। তার মেয়াদ ১৫ সেপ্টেম্বরের পর শেষ হয়ে যেত। না হলে ১৫ সেপ্টেম্বরের পর আমাদের দেশ হয়ে যেত করহীন। চূড়ান্ত অব্যবস্থা তৈরি হত। সংবিধান আমাদের সেই অনুমতি দেয় না। জিএসটি আরও ছ’মাস স্থগিত রাখলে চরম নৈরাজ্য তৈরি হত।”

[প্রকাশ্যে এল জিএসটি ধার্য করা প্রথম বিল, জানেন কত কর চাপল?]

জিএসটি চালু হলে পরোক্ষ কর ব্যবস্থায় সাম্য ও সমতার আদর্শ কার্যকর হবে বলেও জেটলি মন্তব্য করেছেন। তাঁর মত, “এতদিন পরোক্ষ করের ক্ষেত্রে কোনও দ্রব্যের জন্য ধনী—গরিব নির্বিশেষে একই হারে কর দিতেন। নতুন ব্যবস্থায় যে দ্রব্য গরিবরা বেশি ব্যবহার করেন, তাতে কম হারে কর দিতে হচ্ছে। বিলাস দ্রব্যে বেশি হারে কর দিতে হবে ধনীদের। উন্নত দেশে একক করের হার সম্ভব। ভারতে তা সম্ভব নয়। তাছাড়া মুদ্রাস্ফীতির হার কমানোর জন্যও একাধিক করের হার চালু করা দরকার। প্রাথমিকভাবে সেই লক্ষ্যেই আমরা ১২ এবং ১৮ শতাংশ হার চালু করেছি। পরে সে দু’টি একত্র করে গড়ে ১৫ শতাংশ হারে কর চালু করা যেতে পারে। যদি ভাল ভাবে পণ্য তালিকা ও করের হার দেখা যায়, তাহলে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, সরকারের রাজস্ব বাড়বে। কিন্তু সাধারণ মানুষের বোঝা কমবে।”

সম্প্রতি টিম জেটলির সদস্য, অর্থবিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস দাবি করেন, জিএসটি চালু হলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৯ শতাংশে পৌঁছে যাবে। এদিন যদিও আর্থিক বৃদ্ধির হার কতটা বাড়বে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জেটলি। তাঁর দাবি, “সহায়ক পরিস্থিতিতে সাধারণত অর্থনীতি দ্রুত হারে বাড়ে, সরকারের ঘরে বেশি রাজস্ব ঢোকে। ফলে আর্থিক বৃদ্ধির হারও বাড়ে।” জেটলি আরও জানান, সংবিধান সংশোধনের সময় পেট্রোপণ্যকে জিএসটির আওতায় রাখা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যগুলির আপত্তিতে একে ০ শতাংশ জিএসটির তালিকায় আনা হয়। জেটলি বলেন, ১৯৯১—এ আর্থিক সংস্কারের পর ভারত বিশ্ব অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য জায়গায় পৌঁছেছিল। তারপর ১৯৯৬ এবং ২০০৪—এ আরও দুই দফায় আর্থিক ও কর সংস্কার হয়। যা দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছিল। এবার জিএসটি সেই সংস্কারের গতিকে অনেকটা বাড়িয়ে দেবে বলেই তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement