সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘রাস্তা জুড়ে বসে ইদের নমাজ পড়া আটকাতে না পারলে রাজ্যের থানায় থানায় জন্মাষ্টমী পালনে বাধা কেন দিচ্ছেন? কারও কোনও অধিকার নেই জন্মাষ্টমীর উৎসবে বাধা দেওয়ার।’ বুধবার এই মন্তব্য করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বললেন, ‘আমি যদি ইদে নমাজ পড়া না আটকাতে পারি, তাহলে আমার কোনও অধিকার নেই জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার।’
কিন্তু কেন এমন চটলেন মুখ্যমন্ত্রী? একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কানওয়ার যাত্রার (শিবযাত্রা) সময় ডিজে, মাইক, লাউডস্পিকার-সহ যে কোনওরকম মিউজিক সিস্টেমের ব্যবহার নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেন সরকারি অফিসাররা। আর এই নিষেধাজ্ঞাতেই বেজায় চটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, যদি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মাইক বাজানো বন্ধই করতে হয়, তাহলে কোনও ধর্ম না দেখে করতে হবে। কোথাও বাজবে, কোথাও বাজবে না এমনটা যেন না হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমি প্রশাসনকে বলছি, প্রতিটি জেলার আধিকারিকদের বলছি, আমার সামনেই নির্দেশ দিন সমস্ত ধর্মীয় স্থলে লাউডস্পিকার বাজানো বন্ধ করতে হবে। সব জায়গায় ব্যান করুন। কোনও ধর্মীয় স্থানের বাইরে যেন লাউডস্পিকারের আওয়াজ না পাওয়া যায়। পারবেন এমন নির্দেশ লাগু করতে? যদি না পারেন, তাহলে যাত্রাতেও করবেন না। যাত্রা চলবে।’
আরএসএসের দত্তাত্রেয় হোসাবালের উপস্থিতিতে ‘প্রেরণা জনসমাগম এবং সিদ্ধ সংস্থান’-এর এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ, তাঁর দপ্তরের অফিসাররাই তাঁকে কানওয়ার যাত্রায় ডিজে বা লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছিল। কিন্তু সেই পরামর্শ কানে না তুলে যোগী পালটা জানতে চান, ‘এটা কানওয়ার যাত্রা নাকি শবযাত্রা? কেন বাজবে না লাউডস্পিকার?’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মহাদেবের উৎসবে মিউজিক চলবে না, নাচ হবে না, গান হবে না, ঢোল বাজবে না? তাহলে আর কীসের কানওয়ার যাত্রা?’
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দাবি, দেশে প্রত্যেকের স্বাধীনতা রয়েছে নিজ নিজ ধর্ম পালন করার। তিনি বলেন, ‘আপনি ক্রিসমাস উদযাপন করুন। আপনি নমাজও পড়ুন, আরাম করে পড়ুন। কিন্তু ভুলে যাবেন না যে আইন বলেও একটা বস্তু রয়েছে। আইন ভাঙলে কিন্তু প্রশাসনের কড়া হাতে রাশ টেনে ধরা ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকবে না।’
দেশে হিন্দুদের নিয়ে কথা বললেই কারও গায়ে কেন ‘উগ্রপন্থা’ তকমা সেঁটে দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়েও ক্ষোভ চেপে রাখেননি যোগী। বলছেন, ‘আমি যদি বলি গর্ব করে বলো আমি একজন হিন্দু, তাহলে অনেকেই আমাকে নিশানা করে বলবেন, দেখো ওই লোকটা সাম্প্রদায়িক কথা বলছে।’ তাঁর অভিযোগ, নেপাল বা অন্য যে কোনও দেশে যেখানে হিন্দুরা বসবাস করেন, তাঁরা নিজেদের ধর্ম নিয়ে গর্ববোধ করেন। অথচ, ভারতে হিন্দুদের নিয়ে কথা বললেই সাম্প্রদায়িক আখ্যা জোটে কপালে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.