মাসুদ আহমেদ, শ্রীনগর: ইদ কেটেছে নীরবেই। কাশ্মীরের বড় মসজিদগুলিতে বেনজিরভাবে নমাজের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ছোট ছোট জমায়েতের অনুমতি মিলেছিল। তবে, অন্য বছরের তুলনায় এবছরের ইদের ছবিটা ছিল অন্যরকম। অনেকটা একইরকমভাবে মহরম কাটল কাশ্মীরবাসীর। ইসলামের অন্যতম পবিত্র পর্ব এই মহরম। রাস্তায় তাজিয়া-সহকারে শোভাযাত্রা করে শোকপ্রকাশ করাই রীতি। কিন্তু, এবছরের মহরমে কাশ্মীরজুড়ে বিষণ্ন নীরবতা। তাজিয়া-শোভাযাত্রা তো দূরের কথা, রাস্তায় জনমানুষের অস্তিত্বও যেন দেখা গেল না। আসলে, প্রশাসনের তরফে মহরমের কোনও শোভাযাত্রারই অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করছে স্থানীয়রা।
ইদের দিন তবু কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল, মহরমের দিন তা তো করা হয়ইনি। উলটে আরও বেশি কড়াকড়ি করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। দিন দুই আগেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল দাবি করেন, কাশ্মীরের ৯০ শতাংশ এলাকায় কারফিউ উঠে গিয়েছে। প্রায় গোটা কাশ্মীরেই ল্যান্ড ফোনের পরিষেবা স্বাভাবিক হচ্ছে। কাশ্মীরের জনজীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার পথে এগোচ্ছে। বাস্তব ছবিটাও অনেকটা তেমনই ছিল। কিন্তু মহরমের দিন বেনজিরভাবে আবারও কারফিউ জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে উপত্যকার পথঘাট জনশূন্য। প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছে আধা সামরিক বাহিনী। ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো হয়েছে রাস্তা। উপত্যকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার আর শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা বলছেন, আমরা বড় রাস্তায় শোভাযাত্রা করতে চাইনি। অনুমতি চেয়েছিলাম নিজেদের গলিতে শোভাযাত্রা করার। কিন্তু, সে অনুমতিও দেওয়া হয়নি। অনেকে বলছেন, নয়ের দশকে যখন কাশ্মীরের উত্তপ্ত পরিস্থিতি চলছিল, তখনও এত নীরবভাবে মহরম পালিত হয়নি কাশ্মীরের বুকে।
এদিকে সোমবারই উপত্যকায় আট লস্কর জঙ্গির সন্ধান পায় নিরাপত্তারক্ষীরা। তারা বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিল। স্থানীয়দের উত্যক্ত করার অভিযোগও রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মহরমের দিন অতিরিক্ত সতর্কতা বজায় রাখতে হয়েছে প্রশাসনকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.