প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কঃ নাটক যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছে না কর্ণাটকে। এতদিন নাটক ছিল কে ক্ষমতায় আসবে? বিজেপি নাকি কংগ্রেস-জেডিএস জোট, তাই নিয়ে নাটক। আর এবার নাটকে যোগ হয়েছে অন্য মাত্রা। জেডিএসকে সরকার চালানোর জন্য আদৌ কি সম্পূর্ণ পাঁচবছর সমর্থন দেবে কংগ্রেস? চিত্রনাট্যে যোগ হয়েছে এই নয়া পর্ব। যা নিয়ে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আশঙ্কার পারদ চড়িয়েছেন কংগ্রেসের উপ-মুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের একটি মন্তব্য। তিনি জানান, এই বিষয়ে এখনও কোনও দলীয় সিদ্ধান্ত হয়নি। এরপরেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তবে কি আবার ২০০৭-এর স্মৃতি ফিরতে পারে সদ্য শপথগ্রহণ করা কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর জীবনে?
[‘আমার মতো মার্কশিটের ছবি পোস্ট করুন’, মোদিকে চ্যালেঞ্জ কংগ্রেস নেতার]
মঙ্গলবার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন জেডিএস নেতা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার ছেলে এইচডি কুমারস্বামী। তবে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও বিধানসভার স্পিকারের পদ গিয়েছে কংগ্রেসের ঝুলিতে। পাশপাশি ৩২টি দপ্তরের দায়িত্ব থাকছে কংগ্রেসের হাতে ও ১২ দপ্তর নিয়ে খুশি থাকতে হচ্ছে জেডিএসকে। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী কুরসি জেডিএস-এর হাতে থাকলেও সরকার চালানোর চাবি কিন্তু রয়েছে কংগ্রেসের হাতেই। নবগঠিত সরকারের ফ্লোর টেস্টের আগে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে যথেষ্ট সাবধানী ও ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তিনি স্পষ্ট বলেন, প্রথমত তাদের লক্ষ্য সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করা এবং ঠিকঠাক দপ্তর বণ্টন করা। তারপর অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর এখানেই ঘনাতে শুরু করেছে আশঙ্কার মেঘ। তবে রাজনৈতিক মহলের অন্য অংশের যুক্তি, অতীতের বেশিরভাগ নির্বাচনেই মুখ থুবড়ে পড়েছে রাহুল গান্ধির নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে কর্ণাটক নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে তারা যেভাবে অলআউট খেলেছে তা হালে অনেকটাই পানি জোগাচ্ছে। এমত পরিস্থিতিতে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত কুমারস্বামীর জেডিএসের সঙ্গে কংগ্রেস জোট ভাঙবে বা ভাঙার কোনও চেষ্টা করবে বলে মনে হয় না। তবে রাজনীতি পুরোটাই আশঙ্কার খেলা, কখন কী হয়, কেউ বলতে পারে না।
[‘কোহলির পর এবার আমার চ্যালেঞ্জ, পারলে পেট্রলের দাম কমিয়ে দেখান’]
এ যেন ঠিক ছিল কোনও সিনেমার চিত্রনাট্য। ক্ষমতার জন্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে লড়াই। কিন্তু তাতে মাত্রা যোগ করল ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ। বিধায়কদের দলবদলের আশঙ্কায় তাদের পাঁচতাঁরা হোটেলে লুকিয়ে রাখা। দুই অপহৃত বিধায়ককে অজ্ঞাত হোটেল থেকে পুলিশের খুঁজে নিয়ে আসা। অবশেষে একপক্ষের পরাজয় স্বীকার করা ও অন্যপক্ষের মুখে জয়ের তৃপ্তি। সম্প্রতি শেষ হওয়া কর্ণাটক নির্বাচন যেন গোটা একটা সিনেমা বা সিরিয়ালের চিত্রনাট্য। উত্থান-পতন সবই রয়েছে সেখানে। রয়েছে দুপক্ষের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য চূড়ান্ত লড়াইয়ের নমুনা। এমত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কর্ণাটকে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবে কংগ্রেস-জেডিএস জোট। খাতায় কলমে তাদের কাছে ১১৭ বিধায়কের সমর্থন থাকলেও, এবার বিধানসভায় তাদের প্রমাণ করতে হবে যে তাদের কাছে ম্যাজিক ফিগার ১১২-র বেশি বিধায়ক রয়েছে। কুমারস্বামী ও কংগ্রেস আশাবাদী এই পরীক্ষায় সন্মানজনক ফল পাবেন তারা। তবে ফ্লোর টেস্টের আগে কংগ্রেসের উপ-মুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীকে যথেষ্ট অশান্তিতেই রাখছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.