সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীনগরের এক করোনা আক্রান্ত ১০ বছরের ছেলেকে ভরতি না নিয়ে ফিরিয়ে দিল চারটি হাসপাতাল। পরিবর্তে কিশোরকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে বার বার হাত ধোঁয়ার নিদান দেন চিকিৎসকরা। ছেলের চিন্তায় হন্যে হয়ে হাসপাতালের দরজায় ঘোরেন তার পরিজনেরা।
শ্রীনগরের ইদগার বাসিন্দা ওই ১০ বছরের করোনা আক্রান্ত বালক। হাসপাতালে বেড না থাকার অজুহাতে করোনা আক্রান্ত কিশোরকে বাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি তাঁকে শুধু বার বার হাত ধোয়ার মতো অদ্ভুত পরামর্শও দেন খোদ চিকিৎসকরাই। কোনও এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এক ধর্মযাজকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল ওই ছেলেটি। কদিন পরেই ওই ধর্মগুরুর COVID-19 পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সেই সময়েই এই কিশোরের শরীরেও নানা রকম উপসর্গ দেখা দেয়। সর্দি-কাশি-জ্বর হওয়ায় ছেলেকে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে যান বাবা। জানা যায়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ওই কিশোর। এরপর ৪টি হাসপাতাল কিশোরকে ফিরিয়ে দেয়।
অবশেষে, মঙ্গলবার শের-ই-কাশ্মীর ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (SKIMS)-এ ভর্তি করা হয়েছে ওই কিশোরকে। জম্মু ও কাশ্মীরের সবচেয়ে পুরনো হাসপাতাল এই এসকেআইএমএস। কিশোরের বাবা জানান, “করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পরেই কোনও উপায় না থাকায় দু’দিন বাড়িতেই ছিল ওই কিশোর। বাড়িতেই তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল।” তাঁর কথায়, “একই দিনে চার চারটে হাসপাতালে ঘুরেছি। হাতজোড় করে অনুরোধ করেছি সবাইকে। কিন্তু কেউ আমার ছেলেটাকে ভর্তি নেয়নি।” ১৮ মার্চ থেকে ২২ মার্চের মধ্যে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েই ওই কিশোর করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে অনুমান তার বাবার। আপাতত এসকেআইএমএস-এই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ওই কিশোর এবং তার পুরো পরিবারও। আক্রান্তের বাবার অভিযোগ, “শ্রীনগরের ৪টি হাসপাতাল ছেলেকে ভরতি না নিলেও একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা পর্যন্ত করে দেয়নি। পরে নিজেরাই স্থানীয়দের সাহায্যে একটি গাড়ি জোগাড় করে আরেকটি হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে যাই।”
কিশোরের বাবা আরও অভিযোগ জানান, “জেএনএলএম হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়ে দেন কেবলমাত্র পুলিশ যেসব রোগীদের নিয়ে আসছে তাদেরকে ভর্তি করা হচ্ছে। অগত্যা ছেলেকে নিয়ে শ্রীনগরের হাসপাতালেই ফিরে যাই।” শেষ পর্যন্ত ৩০ মার্চ মঙ্গলবার পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি করা গিয়েছে করোনায় আক্রান্ত ওই কিশোরকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.