সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতির আঙিনায় হাওয়া মোরগ বলে একটি রসিকতা চালু আছে। কোনও কোনও নেতার উদ্দেশ্যে সঙ্গোপনে তা ব্যবহার করা হয়। কেন করা হয় তাও খুব স্পষ্ট। কেননা এঁরা সবসময় ক্ষমতার বৃত্তে থাকতে ভালবাসেন। যখনই পালা বদলের আভাস পান, তখন থেকেই এঁরা উলটো সুরে গাইতে থাকেন। সম্প্রতি বিজেপির বিরুদ্ধে যেভাবে তোপ দেগেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, তাতে অনেকের মনেই এই হাওয়া মোরগের উদাহরণ ফিরে এসেছে।
[ ডেরায় ঢুকে ISIS জঙ্গি খতম করুক ভারত, উপায় বাতলালেন স্বামী ]
এই তো কিছুদিন আগের ঘটনা। আরজেডি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারে নিজের ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন নীতীশ। কদিন যেতে না যেতেই মধুচন্দ্রিমা শেষ। তলে তলে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালেন নীতীশ। ফলে পদ্ম শিবিরের তালিকায় আরও একটি রাজ্য ঢুকে পড়েছিল। এদিকে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে লালু যাদব জেলে। কিন্তু তাঁর ম্যাজিক যে ফুয়োয়নি তা সাম্প্রতিক উপনির্বাচনেই প্রমাণ হয়েছে। তিনটি আসনের মোটে একটা হাসিল করতে পেরেছে বিজেপি। জাতীয় রাজনীতিতেও মোদির সুরক্ষিত গড়ে জোর ধাক্কা লেগেছে। অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নায়ডু গোঁসা করে জোট ছেড়েছেন। শিব সেনা তো হুমকি দিয়েই চলেছে। আছেও বটে, আবার নেইও। এদিকে কেসিআর ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজোট হয়ে ফেডারেল ফ্রন্টের নান্দীমুখ করে দিয়েছেন। গুজরাটে কংগ্রেস বুঝিয়ে দিয়েছে যে, বিজেপির পাল থেকে হাওয়া কেড়ে নিতে তৈরি রাহুল গান্ধী। এই পরিস্থিতিতেই পালাবদলের আভাস মিলছে। অন্তত রামবিলাস পাসোয়ানের মতো নেতারা বিলকুল সেই গন্ধ পেয়েছেন। তাই উলটো সুর শোনা যাচ্ছে তাঁদের গলায়। এবার সে দলে ভিড়লেন নীতীশও।
[ বারবার মুলতুবি রাজ্যসভা, সাংসদদের নিয়ে নৈশভোজ বাতিল বিরক্ত বেঙ্কাইয়ার ]
সম্প্রতি নাম না করেই জোটসঙ্গী বিজেপিকে বিঁধেছেন নীতীশ। জানিয়েছেন, রাজনীতিতে কেউ কেউ বিভাজনকেই নীতি মনে করেন। বিভাজনের রাজনীতি করে ক্ষমতায় থাকতে চান। কিন্তু তিনি তাঁর রাজ্যে সেসব বরদাস্ত করবেন না। স্পষ্টতই তাঁর খোঁচা ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের দিকে। নীতীশ সাফ জানান, কেউ কেউ মনে করেন সমাজে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাবলিসিটি পাওয়া যাবে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপির এ নীতি তো আজকের নয়। নীতীশ তা বিলক্ষণ জানতেন। তারপরও হাতে পদ্ম তুলেছিলেন। তাহলে কেন এখন বেসুর। তাহলে তলে তলে কি হাওয়া বদলের পূর্বাভাস নীতীশের কানেও পৌঁছেছে, প্রশ্ন সেটাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.