সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাহিদা ও জোগান। এই দুইয়ের ভারসাম্যই হচ্ছে মজবুত অর্থনীতির চাবি। করোনা কালে খুব স্বাভাবিকভাবেই ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতি। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় জোগান ও চাহিদা দুই-ই তলানিতে ঠেকেছে। তবে আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় জোগানের দিকটা অনেকটাই সামলে গিয়েছে। কিন্তু ছাঁটাই ও মন্দার জেরে আয় কমে যাওয়ায় বাজারে চাহিদা সেই অর্থে নেই। তাই সোমবার চাহিদা (demand) বাড়ানোর একাধিক দাওয়াই দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।
The pandemic has adversely affected the economy. The needs of the poor and weaker sections addressed in various announcements by the govt. Supply constraints have somewhat eased but consumer demand still needs to be given a boost: FM Nirmala Sitharaman pic.twitter.com/r3wEvIiRpe
— ANI (@ANI) October 12, 2020
এদিন সংবাদ সম্মেলনে নির্মলা বলেন, “দেশের অর্থনীতিতে করোনা মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গরীবদের প্রয়োজন মেটাতে নানা পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। জোগান সম্পর্কিত সমস্যাও অনেকটাই মিটেছে। তবে উপভোক্তা চাহিদা বা কনজিউমার ডিমান্ড বাড়িয়ে তুলতে পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। তাই বাজারে চাহিদা বাড়াতে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে উপভোক্তা সম্পর্কিত। সেখানে সরাসরি কিছু পরিবর্তন এনে ব্যয় বৃদ্ধি করা। বাকিটা জিডিপি বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।”
অর্থনীতিবিদের মতে বাজারে চাহিদা বাড়াতে নগদের জোগান বাড়াতে হবে। সেই কথা মাথায় রেখেই, এদিন সরকারি কর্মীদের জন্য ‘LTC Cash Voucher Scheme’ ও ‘Special Festival Advance Scheme’ শুরু করার কোথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এই দুই প্রকল্পের ফলে সরকারি কর্মীদের হাতে নগদের জোগান বাড়বে ফলে সেই টাকা খরচ করলে অর্থিনীতির নিজস্ব নিয়মে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে করোনা আবহে পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার ‘আত্মনির্ভর’ প্যাকেজ ঘোষণা করে মোদি সরকার। দিন তিনেক ধরে চলা সংবাদ সম্মেলনে সেই প্রকল্পের রূপরেখা বর্ণনা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মল সীতারমণ (Nirmala Sitharaman)। মূলত, জোগান নির্ভর ওই প্যাকেজ নিয়ে কিন্তু দেখা দেয় একাধিক প্রশ্ন। যেমন, লকডাউন চলায় চাহিদা ঠেকেছে তলানিতে, ব্যবসা বন্ধ হকারদের, সে ক্ষেত্রে তাঁরা ব্যাংক থেকে লোন নেবেই বা কেন? বাজারে খদ্দের নেই, সেক্ষেত্রে নতুন করে পসরা সাজাবেই বা কেন তাঁরা? ক্ষুদ্র বা মাঝারী শিল্পের ক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন প্রযোজ্য। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদর মতে, অর্থনীতির দু’টি দিক হচ্ছে–চাহিদা ও যোগান। লকডাউন চলায় নিচের দিকে নেমেছে চাহিদার গ্রাফ। সে ক্ষেত্রে সরাসরি ব্যাংক খাতায় টাকা দেওয়া-সহ অন্যান্য চাহিদা বাড়ানোর দাওয়াই না দিয়ে, সরকার ব্যাংকের মাধ্যমে লোন জোগান দিতে ব্যস্ত। অর্থাৎ জোগানের দিক নিয়েই বেশি ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। করোনা আবহে আতঙ্কিত মধ্যবিত্তদের আয়করে কিছুটা ছাড় দিয়ে বাজারমুখী করা যেতেই পারত। সেই সব সমালোচনার জবাবেই এবার চাহিদা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.