সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ ইচ্ছা কী? পরিবারের কারও সঙ্গে অথবা কোনও প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করতে চাও? সম্পত্তি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু আছে? জীবনের প্রায় অন্তিম লগ্নে দাঁড়িয়ে শেষ ইচ্ছে নিয়ে নীরবই রইল নির্ভয়ার চার ধর্ষক। এমনই খবর তিহার জেল সূত্রে। ১ ফেব্রুয়ারি চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে নিয়ম অনুযায়ী তাদের সকলের অন্তিম ইচ্ছা জানতে চেয়েছিল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। সেই ইচ্ছা পূরণের জন্য। কিন্তু অক্ষয়, বিনয়, পবন, মুকেশ – চারজনের কেউই কোনও উত্তর দেয়নি। তাতে তিহার কর্তৃপক্ষের ধারণা, এর জন্য হয়ত আরও কিছু সময় নিতে চাইছে তারা।
মৃত্যু আসন্ন। একাধিকবার প্রাণভিক্ষার আরজিতে সাড়া দেয়নি কেউ। দেশের বিচারব্যবস্থা অনুযায়ী, জঘন্যতম অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ সাজাই পাচ্ছে নির্ভয়ার চার ধর্ষক – মুকেশ সিং, অক্ষয় সিং, বিনয় শর্মা এবং পবন গুপ্তা। ২২ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ডের দিন ধার্য করা হলেও, পরে আইনি জটিলতায় তা পিছিয়েছে পয়লা ফেব্রুয়ারিতে। এখনও পর্যন্ত সেই দিনটাই স্থির। ওইদিন সকাল ৬টায় তিহার জেলে ফাঁসির দড়ি পরবে তাদের গলায়। তার জন্য প্রস্তুতিও প্রায় সারা। উত্তরপ্রদেশের মিরাটের ফাঁসুড়ে পবনের হাত ধরে কার্যকর হবে চার ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড।
নিয়ম অনুযায়ী, মানবিকতার স্বার্থে ফাঁসির আসামির শেষ ইচ্ছা পূরণ করা হয়। নির্ভয়ার ধর্ষকদেরও ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একই নিয়ম। আর সে কারণেই তাদের অন্তিম ইচ্ছা জানতে চেয়ে তা পূরণের চেষ্টা করেছিল জেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চারজনই এই প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়ে নীরব থেকেছে। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির রাস্তায় চলন্ত বাসে প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে গণধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার পর থেকেই গোটা দেশের কাছে ভিলেন হয়ে উঠেছিল এরা। যেনতেন প্রকারেণ চূড়ান্ত শাস্তিদানে বারবার গর্জে উঠেছে দেশ। ৭ বছরের দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে যখন ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল, তখনও শাস্তি পাওয়া এড়াতে কম চেষ্টা করেনি অক্ষয়, বিনয়, পবন, মুকেশরা। শেষ বেলাতেও প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছে। কিন্তু তাদের সমস্ত প্রচেষ্টা বিফলে গিয়েছে।
পয়লা ফেব্রুয়ারি চারজনের জীবনে ইতি পড়া নিশ্চিত। আর জীবনের এই শেষলগ্নে দাঁড়িয়ে এরা নিজেরাও হয়ত বুঝতে পারছে, শেষ ইচ্ছা বেঁচে থাকা ছাড়া আর কিছুই নয়। যে ইচ্ছা আর পূরণ হওয়ার পথও নেই। এমন এক নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে যে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-বন্ধু সকলেই পরিত্যাগ করেছে। তাই কারও সঙ্গে দেখা করতেও ইচ্ছে হয় না। হয়ত তাই শেষ ইচ্ছা সম্পর্কে তারা নিশ্চুপ। বরং শেষ সময়টুকু নিজের সঙ্গেই কাটাতে চায় অক্ষয়, পবন, বিনয়, মুকেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.