সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নির্ভয়া কাণ্ডের প্রায় এক যুগ পেরিয়েছে। তেমনই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়, অভয়ার সঙ্গে। ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। শনিবার শিয়ালদহ আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করার পরও সে দাবি করে গিয়েছে, সে কিছুই করেনি, এতে অন্যরাও জড়িত। তাদের কেন ধরা হল না? সুদূর দিল্লিতে বসে টেলিভিশনে এই সমস্ত খবরই দেখেছেন নির্ভয়ার বাবা। মনে পড়ে গিয়েছে মেয়ের দুঃসহ স্মৃতির কথা। আর জি কর মামলার রায়দানের পর ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি প্রশ্ন তুললেন। বললেন, ”ও নির্দোষ হলে, কোনও দোষ না করলে, যারা দোষ করেছে তাদের নাম কেন বলছে না?”
২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লিতে চলন্ত বাসে নির্ভয়া ধর্ষণ এবং হত্যামামলা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল দেশে। গ্রেপ্তার হয় এক নাবালক-সহ ৬ জন। এর মধ্যে বিচার চলাকালীন জেলে একজনের মৃত্যু হয়। নাবালককে পাঠানো হয় জুভেনাইল হোমে। বাকি চারজনের ফাঁসি হয়। তাতে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন আপামর দেশবাসী। ২০২৪ সালের আগস্টে কলকাতার বুকে ঘটে গিয়েছে প্রায় তেমনই ঘটনা। কর্তব্যরত অবস্থায় হাসপাতালের অন্দরে ধর্ষণের পর খুন হয়ে যান তরুণী চিকিৎসক। তার ৫ মাস ১২ দিনের মাথায় দোষী সাব্যস্ত করা হল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। সোমবার সাজা ঘোষণা। কিন্তু তারপরও সঞ্জয় টানা দাবি করে গিয়েছে, সে কিছু করেনি। সবাই মিলে দোষ করেছে।
এই দাবি শুনে নির্ভয়ার বাবার প্রতিক্রিয়া, ”এখন কেন বলছে? আগে কেন বলেনি? আর যদি বলে যে সে নির্দোষ, তাহলে কারা দোষ করেছে, তাদের নাম তো জানে। সেটা কেন বলছে না? তাছাড়া এখন এসব বলে কী লাভ? আমরা তো দেখেছি কত লোকই তো টাকার বিনিময়ে অন্যের দোষ নিজের কাঁধে নিয়ে নেয়। সেও এরকম কিনা, কে বলতে পারে?” নির্ভয়ার বাবার আরও দাবি, ”আদালত তো পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট আর সংবাদমাধ্যমের খবরাখবরের উপর ভিত্তি করে রায় দিয়েছে। নিজেদের বিবেচনা অনুযায়ী তো রায় দেওয়া হয় না।” অর্থাৎ তাঁর স্পষ্ট ইঙ্গিত মিডিয়া-ট্রায়ালের দিকে। তবে তারপরও বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রেখেছেন তিনি। আশা রেখেছেন, কুকর্মের যথাযথ শাস্তিই পাবে সঞ্জয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.