সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন তালাকের মতো ‘ঘৃণ্য’ প্রথার বিরুদ্ধে একদিকে যেমন সরব হয়েছেন মুসলিম মহিলাদের একাংশ, তেমনই অন্যদিকে কেন্দ্রও তিন তালাকের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এক সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ে গেল মুসলিম পার্সোনাল ল’-এর অন্ধকারতম দিকটি। রিপোর্ট মোতাবেক, মুসলিম মহিলারা বিয়ে বাঁচাতে মৌলবিদের সঙ্গে রাত্রিযাপনে বাধ্য হন। শুধু তাই নয়, মৌলবিদের লক্ষ লক্ষ টাকাও দিতে বাধ্য হন তাঁরা।
কী ধরা পড়েছে ওই স্টিং অপারেশনে?
সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলটির রিপোর্ট বলছে, স্বামী ‘তালাক’ দিয়েছেন, এমন মুসলিম মহিলারা যদি ফের ওই ব্যক্তিকেই বিয়ে করতে চান, তাহলে তাঁদের অন্য একটি বিয়ে করে আগে ডিভোর্স নিতে হয়। এক্ষেত্রে মৌলবিদের চাহিদা মারাত্মক। ওই মৌলবিকে বিয়ে করে, রাত্রিযাপন করে, কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে ডিভোর্স নেন মুসলিম মহিলারা। যাতে পুরনো স্বামীকেই ফের বিয়ে করতে পারেন। এরকম বিতর্কিত আইনকে মুসলিম পার্সোনাল ল’ ‘নিকাহ হালালা’ বলে উল্লেখ করে।
স্বামী তালাক দিয়েছেন, এমন মুসলিম মহিলারা যদি ফের ওই ব্যক্তিকেই বিয়ে করতে চান, তাহলে মৌলবিদের সঙ্গে রাত্রিযাপনে কোনও ‘দোষ’ দেখে না মুসলিম ল’ বোর্ড। এক্ষেত্রে মৌলবিরাও এক রাত্রি কাটানো ও ‘তালাক’ দেওয়ার জন্য ইচ্ছামতো দাম হাঁকেন। ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদে চান মৌলবিরা। মুসলিম মহিলারাও স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য ওই টাকা দিতে কার্যত বাধ্য হন। স্টিং অপারেশনে এরকমই এক মৌলবি স্বীকার করেছেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে না জানিয়েই দিব্যি ‘নিকাহ হালালা’ প্রথা চালিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ, মৌলবির স্ত্রীও জানতে পারেন না যে তাঁর স্বামী অর্থের বিনিময়ে কোনও ডিভোর্সি মুসলিম মহিলার সঙ্গে রাত্রিযাপন করছেন।
Yesterday was landmark day4 #LeftSecular – #RohithVemula lies #LoveJihad expose #NikahHalala shame. Indefensible being defended shamelessly
— Ratan Sharda (@RatanSharda55) August 17, 2017
India must worry for its future as democracy if ruling right-wing continues to be flippant about genuine fears of its largest minority group
— Rifat Jawaid (@RifatJawaid) August 10, 2017
স্টিং অপারেশনে এও ধরা পড়েছে, ‘নিকাহ হালালা’ আসলে ছুতো। স্বামী ‘তালাক’ দিয়েছেন, এমন মহিলাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেই বেশি আগ্রহী হন মৌলবিদের একাংশ। ইসলামের সব নিয়ম মেনে বিয়ে পর্যন্ত করেন না অনেক মৌলবি। স্রেফ টাকা নিয়ে ও এক রাত কাটিয়ে কোনওমতে ডিভোর্সি মুসলিম মহিলাকে তাঁর আসল স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেন। যাতে তাঁরা দু’জনে ফের বিয়ে করতে পারেন। উত্তরপ্রদেশের এক মৌলবি গোপন ক্যামেরার সামনে স্বীকার করেছেন, তিনি মাদ্রাসার নামে অনুদান চেয়ে বেশ কয়েকজন মুসলিম মহিলার সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন। এক্ষেত্রে রয়েছে বিশেষ প্যাকেজের বন্দোবস্তও। যার মধ্যে ‘সেক্স’-এর জন্যও আলাদা খরচ ধরা রয়েছে।
গাজিয়াবাদে এক মৌলবিকে ক্যামেরার সামনে বলতে শোনা যাচ্ছে, যে তিনি এর আগে একরম বেশ কিছু ‘নিকাহ হালালা’ উতরে দিয়েছেন। যার কথা তাঁর স্ত্রীও জানেন না। দিল্লির একটি বিখ্যাত মসজিদের এক মৌলবি আবার ছদ্মবেশে থাকা সাংবাদিকের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, যে তিনি দিনের যে কোনও মুহূর্তেই বিবাহবিচ্ছিন্না মুসলিম মহিলাদের সঙ্গে শয্যায় যেতে প্রস্তুত। তাঁর বক্তব্য, ‘আমার দপ্তরেই আলাদা বেডরুম রয়েছে। সেখানে নিয়ে গিয়ে রাত তিনটে পর্যন্ত যা করার করব। দিনের আলো ফুটলেই ডিভোর্স দিয়ে দেব।’
Asaram Bapu is in jail for rape. Will you insist tgat moulvis who encourage and take part in Nikah Halala to be jailed ?
— Ram (@raman_indian1) August 17, 2017
Yes Questions should be asked of all religions. But pl share your views on this Nikah Halala. Is it Islamic and does Islam encourage this.
— Ram (@raman_indian1) August 17, 2017
মৌলবিদের একাংশের এই অবাধ যৌনাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন শিক্ষিত মুসলিম সমাজেরই আর একটি অংশ। সরব হয়েছেন মুসলিম অধ্যাপক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরাও। ইমাম কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার প্রধান মৌলানা মাকসুদ-উল-হাসান কাসমি বলছেন, ‘এই প্রথা ধর্ষণের চেয়ে কোনও অংশে কম জঘন্য নয়।’ মৌলানা আজাদ ন্যাশনাল উর্দু ইউনিভার্সিটির আচার্য জাফর সরেশওয়ালা বলছেন, ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ আসলে গুটিকয়েক অসাধু মুসলিমের পকেট ভরার কাজেই বেশি দরকারি হয়েছে পড়েছে এখন।’ গরিব নওয়াজ ফাউন্ডেশনের মৌলানা আনসার রাজার বক্তব্য, ‘যাঁরা এই ধরনের নিকাহ হালালা চালাচ্ছেন, তাঁদের জুতো দিয়ে মেরে মসজিদ থেকে বার করে দেওয়া উচিত।’ বিজেপি নেতা ও আইনজীবী গৌরব ভাটিয়া বলছেন, ‘সতীদাহ প্রথা ভারত থেকে উঠে গিয়েছে। এবার নিকাহ হালালার মতো অবাধ যৌনাচারের উপরেও রাশ টানতে হবে কেন্দ্রকে। আর এই কাজের জন্য মুসলিম সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে, গর্জে উঠতে হবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.