সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ডুকরে কেঁদে উঠল মায়ের মন। সুবিচার এখনও মরীচিকার মতোই। কারণ আরও একবার পিছিয়ে গেল নির্ভয়া কাণ্ডে ধর্ষকদের ফাঁসির দিনক্ষণ। এর আগে দু’বার ফাঁসির দিন ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল ফাঁসি। পাতিয়ালা হাউস কোর্টের নয়া নির্দেশে চূড়ান্ত হতাশ আশাদেবী।
১ ফেব্রুয়ারি নির্ভয়ার দোষীদের ফাঁসি নয়। শুক্রবার জানিয়ে দেয় পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। পরবর্তী রায়দানের আগে পর্যন্ত মৃত্যু পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। আর তারপরই আদালতের বাইরে ক্ষোভ উগরে দেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। তিনি বলেন, “ওরা যা চাইছে তাই হচ্ছে। ওদের কথা শুনেই বারবার ফাঁসির দিনক্ষণ পিছিয়ে যাচ্ছে। এবার সুপ্রিম কোর্টই ঠিক করুক কী হবে। দোষীর আইনজীবী এপি সিং আমায় চ্যালেঞ্জ করেছে যে ওদের কোনওদিনই ফাঁসি হবে না। কীভাবে ওঁ চ্যালেঞ্জ করে তাহলে আমাকে? নিশ্চয়ই ওঁর খুঁটি শক্ত। কিন্তু আমি লড়াই চালিয়ে যাব। সরকারকে ওদের ফাঁসি দিতেই হবে। এমনটা হতে থাকলে দেশে অপরাধ শুধু বেড়েই যাবে। আর কেউ শাস্তিও পাবে না। এভাবে চলতে থাকলে সংবিধান জ্বালিয়ে দেওয়া হোক আর কী।” বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন ২০১২ সালে দিল্লির গণধর্ষণ কাণ্ডে প্রাণ হারানো নির্ভয়ার মা।
Asha Devi, mother of the 2012 Delhi gang-rape victim: The lawyer of the convicts, AP Singh has challenged me saying that the convicts will never be executed. I will continue my fight. The government will have to execute the convicts. pic.twitter.com/NqihzqisQo
— ANI (@ANI) January 31, 2020
প্রথমে জানানো হয়েছিল, দোষীদের ফাঁসি হবে ২২ জানুয়ারি। কিন্তু একাধিক আইনি জটিলতায় তা পিছিয়ে যায়। আদালতের নির্দেশে নির্ভয়ার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের দিন ধার্য হয় ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এবার আর নতুন করে কোনও দিনক্ষণও ঘোষিত হল না। ফাঁসি পিছিয়ে যাওয়ায় সেবারও ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন আশাদেবী। বলেছিলেন, “তারিখের পর তারিখ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সুবিচার পাওয়া গেল না। শুধু দোষীদের দিকটাই দেখা হচ্ছে। আর ভুগতে হচ্ছে আমাদের।” এখানেই থামেননি তিনি। এর পিছনে রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত বলেও অভিযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন, “এতদিন পর্যন্ত আমি রাজনীতির কথা বলিনি। এবার বলতে চাই, যারা ২০১২ সালে এই ঘটনার প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল, তারাই আমার মেয়ের মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য নোংরা খেলা খেলছে।” আর পাতিয়ালা হাউস কোর্টের নয়া নির্দেশে যেন ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে তাঁর।
উল্লেখ্য, এদিনই সুপ্রিম কোর্টে নির্ভয়ার ধর্ষকের পবন গুপ্তার আরজি খারিজ করা হয়েছে। তার দাবি, ২০১২ সালে ধর্ষণকাণ্ডের সময় সে নাবালক ছিল। কিন্তু পুলিশি তদন্তের সময় তাকে নাবালক হিসেবে দেখানো হয়নি। এ নিয়ে আগেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পবনের আইনজীবী। সেসময় তার আরজি খারিজ করে দেওয়া হয়। কেন তার সেই আরজি খারিজ করা হল, এনিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তার আইনজীবী। সেই আরজিই এদিন খারিজ হয়। এদিকে বিনয় শর্মার প্রাণভিক্ষার আরজি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ কাছে রয়েছে। সে নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি রাষ্ট্রপতি। আর আইন বলছে, রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আরজি খারিজ ও রায় সংশোধনের আরজি খারিজের পরও দোষীদের ১৪দিন সময় দিতে হয়। ফলে চার দোষীর ফাঁসি কবে হবে, তা এখনও অজানাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.