সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসমের জনপ্রিয় কৃষক নেতা অখিল গগৈয়ের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগাযোগ নিয়ে তদন্তে এবার আইআইটি গুয়াহাটি পৌঁছে গেল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। শনিবার সংস্থা ওই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক নামী অধ্যাপককে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেছে। উল্লেখ্য, কৃষক নেতা অখিল গগৈ কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির (কেএমএসএস) উপদেষ্টা। আর যে অধ্যাপককে জেরা করা হয়েছে, সেই অরূপজ্যোতি শইকিয়া আবার গগৈয়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।
শনিবার এনআইএ দপ্তরে আইআইটি-র (গুয়াহাটি) হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস বিভাগের ওই অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করা হয়। আধুনিক অসমের আর্থিক, পরিবেশগত এবং রাজনৈতিক ইতিহাস নিয়ে অধ্যাপক শইকিয়ার বেশ কয়েকটি বই রয়েছে। নামী লেখক হিসাবে পরিচিত তিনি। প্রায় চার ঘণ্টা জেরার পর তাঁকে অবশ্য বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। শইকিয়ার আইনজীবী শান্তনু বরঠাকুর জানিয়েছেন, এনআইএ তাঁর জবানবন্দি নথিভুক্ত করেছে। সোমবার তাঁকে ফের হাজিরা দিতে হবে। তবে অভিযুক্ত নয়, শইকিয়াকে সাক্ষী হিসাবে ডেকে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে জোরহাটে প্রতিবাদ আন্দোলন করায় অখিল গগৈয়ের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে মাওবাদীদের সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। অখিল ছাড়াও কেএমএসএস-এর আরও অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। গত বছরের ডিসেম্বরে তঁাদের গ্রেফতার করা হয়। তখন থেকেই তাঁরা হেপাজতে রয়েছেন। ওই মামলার তদন্তে চারদিন আগে ‘সমন’ পাঠিয়ে শইকিয়াকে তলব করা হয়।
জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অরূপজ্যোতি শইকিয়া দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। পরে উচ্চতর ডিগ্রি পান ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে। দেশ ও বিদেশের বহু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো ও বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে তাঁর বই ‘দ্য আনকোয়েট রিভার : আ বায়োগ্রাফি অফ দ্য ব্রহ্মপুত্র’ প্রকাশিত হয়েছে। শইকিয়াকে জেরা করার জন্য ডেকে পাঠানোয় বিস্মিত তাঁর ছাত্রছাত্রীরা। যদিও অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এ বিষয়ে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
গত ১১ ডিসেম্বর অসম সচিবালয়ের সামনে সিএএ বিরোধী আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল। হিমন্ত তখন জানান, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন বুদ্ধিজীবী এই আন্দোলনকে নেপথ্যে থেকে পরিচালনা করছেন। তিনি বলেন, “গোপন জায়গায় বসে কীভাবে অসম সচিবালয়ে আগুন লাগানো যায়, তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। নির্দেশ দিয়েছিলেন অসমের অত্যন্ত নামী একজন শিক্ষাবিদ।” দীর্ঘদিন ধরে গগৈ এবং কেএমএসএস নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ হলেও শইকিয়া কখনও সামনে থেকে কৃষক বা সিএএ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.