Advertisement
Advertisement
রাম মন্দির

রাম মন্দির দেখে তাক লেগে যাক, তৈরির আগেই পাখির চোখ নির্মাণকারীদের

২০২২ সালের মধ্যে মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ন্যাসের।

New Ram Temple will be magnificient, builders aim at this
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 10, 2019 8:24 pm
  • Updated:November 11, 2019 8:27 am

সোমনাথ রায়, অযোধ‌্যা: এই না হলে মন্দির! দেখা যেন আর ফুরোয় না। নবগঠিত রাম মন্দির দেখে যেন এরকমই বোধ হয় আমজনতার। এটাই চাইছেন অযোধ্যাবাসী, এটাই চান তাঁরা। শ্রীরাম জন্মভূমি ন্যাস বা কেন্দ্রের তৈরি ট্রাস্টের তত্বাবধানে যেসব মূর্তিতে সেজে উঠবে আগামীর রাম মন্দির, তা তৈরি হবে করসেবকপুরমে। মন্দির নির্মাণের কাজে যুক্ত যাঁরা, প্রত্যেকের মুখে একই কথা। মানসচক্ষে এখনই দেখছেন তাঁদের বহু প্রতীক্ষীত মন্দিরটিকে। দিনে ভক্তসমাগম, সন্ধ‌ের আলোয় উদ্ভাসিত মন্দিরে ঘণ্টাধ্বনি।

শনিবার বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে দিয়েছে। রবিবার প্রাচীন শহরে আলোচনা, কবে ও কীভাবে তৈরি হবে রামলালার মন্দির। কবে থেকে শুরু হবে মন্দির নির্মাণের কাজ, তা এখনই স্পষ্ট নয়। আগামী তিন মাসের মধ্যে তৈরি হবে ট্রাস্ট। এরপর তারা আলোচনা করে ঠিক করবে মন্দির তৈরির প্রক্রিয়া। তবে আপাতত শোনা যাচ্ছে, ২ এপ্রিল রামনবমীর দিন শুরু হতে পারে মন্দির নির্মাণের কাজ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মন্দির ঘিরে অর্থনীতি বিকাশের স্বপ্নে বুঁদ অযোধ্যাবাসী, শোনালেন আশার কথা]

কীভাবে তৈরি হবে মন্দির, সেই উত্তর পেতে খুব একটা মাথা ঘামাতে হল না। প্রস্তাবিত রাম মন্দিরের এলাকা থেকে দু’কিলোমিটার দূরেই ন‌্যাসের কর্মশালা। গত তিন বছর ধরে সেখানে চলছে রাম মন্দির নির্মাণের ব্লু প্রিন্ট। জানা গেল, গুজরাতের সোমনাথ মন্দিরের নকশা বানিয়েছিলেন প্রভাশঙ্কর সোমপুরা। তাঁর পুত্র চন্দ্রকান্তকে ১৯৯০ সালে রাম মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব দেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তৎকালীন সভাপতি অশোক সিঙ্ঘল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বংশানুক্রমিকভাবে মন্দির গড়ে তোলে সোমপুরা পরিবার। দেশজুড়ে শতাধিক বড় বড় মন্দির বানিয়েছেন তাঁরা। এর মধ্যে সবথেকে দামি মন্দির বানিয়েছেন চন্দ্রকান্তই। দশ কোটি টাকায় পালনপুরে অম্বা মাতার মন্দির।
তবে সেই অতীতের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে ফেলবে রাম মন্দির। এমনটাই বলা হচ্ছে ন‌্যাসের পক্ষ থেকে। তা মাহাত্ম্যেই হোক বা সৌন্দর্যে, অথবা আর্থিক মূল‌্যে।

চন্দ্রকান্তর সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই রাজস্থানের ভরতপুরের গোলাপি রংয়ের পাথর বাছাই করা হয়েছে রাম মন্দির নির্মাণের জন‌্য। নকশা অনুযায়ী মন্দির, তৈরিতে প্রয়োজন আড়াই লক্ষ ঘনফুট পাথর। গত তিন দশকে অযোধ‌্যা, ভরতপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় সওয়া লক্ষ ঘনফুটের পাথর ঘসেমেজে তৈরি হয়ে রয়েছে। বলা হচ্ছে, এতেই মন্দিরের প্রথম তল তৈরি হয়ে যাবে।

মনে করা হচ্ছে, কাজ শুরুর বছর আড়াইয়ের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে মন্দিরের কাজ। লক্ষ‌্য ২০২২ সাল। ন‌্যাসের কর্মশালায় রাখা রয়েছে প্রস্তাবিত রাম মন্দিরের একটি মডেল। সেই অনুযায়ী ২৬৮ ফুট লম্বা, ১৪০ ফুট চওড়া ও ১১২ ফুট উঁচু হবে মন্দির। গোটা মন্দিরে ২৫১টি স্তম্ভ আছে। যার মধ্যে প্রতি তলে থাকবে ১০৬টি করে। যার পরিধি চার ফুট। প্রত্যেক স্তম্ভে থাকবে ১৬টি করে মূর্তি। প্রথম তলের উচ্চতা হবে সাড়ে ১৬ ফুট, দ্বিতীয় তল সাড়ে ১৪ ফুটের। বাকি ১১০ ফুট সিঁড়ি ও গম্বুজ। গম্বুজের উচ্চতা সওয়া ৬৫ ফুট। বাকি উচ্চতায় সিঁড়ি।
মন্দিরে থাকবে পাঁচটি দ্বার। সিংহদ্বার হবে পূর্বদিকে। বাকি চারটি হল, অগ্রভাগ, নৃত‌্যমণ্ডপ, রণ্ডমণ্ডপ ও গর্ভগৃহ। মূল মন্দিরের চারদিকে থাকবে লক্ষ্ণণ, সীতা, হনুমান ও গণেশ মন্দির। এছাড়া বিজয়স্তম্ভ, লাইব্রেরি, অতিথিশালা-সহ থাকবে বিভিন্ন ভাগ। মূল মন্দিরের প্রথম তলে থাকবে ছ’ফুটের রামলালা (শিশু রাম)-এর মূর্তি। শিশু রামের যে মন্দির এখন রয়েছে রাম জন্মভূমিতে, সেই আদলেই তৈরি হবে বিগ্রহ। দ্বিতীয় তলে থাকবে সীতা, বাকি তিন ভাইয়ের সঙ্গে রামের মূর্তি, শ্রীরামের রাজদরবার ইত‌্যাদি। দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তরা রেখে গিয়েছেন ‘শ্রীরাম’ লেখা ইট। তার সবক’টিই ব‌্যবহার হবে মন্দির নির্মাণে। আগে থেকে ঠিক করে রাখা নকশার সঙ্গে আরও একটি বিষয় ঘুরছে ন‌্যাসে। অনেকেই চাইছেন এতদিন ধরে চলা বিতর্কের পর যখন মন্দির নির্মাণের অনুমতি এসেছে, তখন শ্রীরামের একটি বিশালাকার মূর্তি তৈরি হোক। যদিও এখনই এই নিয়ে সিদ্ধান্তের অবকাশ নেই। এই সিদ্ধান্ত নেবে নতুন তৈরি ট্রাস্ট।

[আরও পড়ুন: সুপ্রিম নির্দেশে ৫ একর জমি কি গ্রহণ করা হবে? বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড]

রাম জন্মভূমি সমন্বয় সমিতির সভাপতি আচার্য নারায়ণ মিশ্র বলছিলেন, “সব ঠিকঠাক থাকলে আশা করি আড়াই-তিন বছরের মধ্যে মন্দিরের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে এসব পরে। আগে তো ট্রাস্ট তৈরি হোক। তারাই তো সব পরিকল্পনা নেবে। তবে সবারই ইচ্ছা রাম নবমীর দিন মন্দিরের কাজ শুরু হোক।” 

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement