স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: শনিবার সকালেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ উল্লেখ করেছিল কুম্ভ স্পেশাল ট্রেনের কারণে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রেলের কর্তাব্যক্তিদের নাজেহাল দশা। রাতেই ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। নয়াদিল্লি স্টেশনে (New Delhi Station)পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন ১৮ জন। সাত থেকে ৭৯ বছর বয়সি মৃতদের মধ্যে আছেন চারজন পুরুষ, ন’জন মহিলা ও পাঁচজন শিশু। আরও অন্তত জনা পনেরো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও শুরুতে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার যথাসম্ভব চেষ্টা করেছিল রেল। স্বয়ং রেলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। দিল্লি ও রেল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভিড় কমাতে আরও স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হচ্ছে। ২১ ঘণ্টা বাদে ঘুম ভাঙল রেলের। সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ ঘটনার সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। ‘পদপিষ্ট’ শব্দের উল্লেখ করা হয় সেখানে।
কাঠগড়ায় রেলমন্ত্রী
ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর কাঠগড়ায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ। বিরোধীরা সরব রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে। একের পর ট্রেন দুর্ঘটনা, গাফিলতি, পদপিষ্টের মতো ভয়াবহ ঘটনার পর কেন গদি আঁকড়ে রয়েছেন তিনি, প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল-সহ বিরোধীরা।
কেন দুর্ঘটনা?
শনিবার রাত তখন ৯টা ১৫। নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল পাটনাগামী মগধ এক্সপ্রেস ও জম্মুগামী উত্তর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস। মগধ এক্সপ্রেস চলে গেলে ১৪ নম্বরে আসার কথা ছিল প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেসের। আবার স্বাধীনতা সেনানী এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশ কিছুটা দেরিতে চলছিল। যার জেরে ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমাণ যাত্রীর বিশাল ভিড় ছিল। এই ভিড় সামাল দিতে সেই সময়ই ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রয়াগরাজগামী একটি বিশেষ ট্রেনের ঘোষণা হয়। সেই ট্রেন ধরার জন্য শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি। ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যে সিঁড়ি আছে, সেখানেই পড়ে যান অনেকে। এরপর ভিড়ের ধাক্কা সামলাতে না পেরে তাঁদের উপর পড়ে যান অন্যরা। এইভাবেই ঘটে যায় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা।
কেন এত ভিড়?
পদপিষ্ট হওয়ার পিছনে রেল পুরোদস্তুর চেষ্টা করেছে নিজেদের ঘাড় থেকে দায় ঠেলে দেওয়ার। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও রেলের তরফ থেকে যে তথ্য আসছে, তা অনুযায়ী এই দুর্ঘটনার পিছনে একটি বড় দায় ভারতীয় রেলের। শনিবার সন্ধ্যা আটটা থেকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য ঘণ্টায় ১৫০০ অসংরক্ষিত টিকিট ইস্যু করা হয়েছে বলে খবর। যার জেরেই ১০ হাজারেরও বেশি যাত্রী একসঙ্গে পৌঁছে যান প্ল্যাটফর্মে। প্রবল ভিড়ের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, দুটি কুম্ভগামী ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যার জেরে প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস দেখামাত্রই যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে সেই ট্রেনে উঠতে যান। ফলে দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়। খবর পেয়েই রেল পুলিশ এবং দিল্লি পুলিশের দল নয়াদিল্লি স্টেশনে যায়। কিন্তু তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। শুরুর দিকে রেলের তরফে এই ধরনের দাবিও করা হয়। পদপিষ্টের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ভিড়ের ঠেলায় দমবন্ধকর পরিস্থিতির কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন, এই কথাও প্রাথমিকভাবে বলে রেল।
যাত্রী নিরাপত্তা কোথায়? কুলি, প্ল্যাটফর্মে থাকা দোকানি ও স্বজন-হারানো কয়েকজনের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, ঘটনার সময় স্টেশনে ছিলেন না কোনও আরপিএফ কর্মী। এত বড় ভিড়কে যার ফলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবই হয়নি। দেশের সবথেকে ব্যস্ত স্টেশন নয়াদিল্লি। যার প্রতিটি কোনায় রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। কুম্ভের কারণে রেলভবনের ওয়ার রুম থেকে লাগাতার নজরদারি চলছে বলেই দাবি রেলের। সেক্ষেত্রে কী ছিল ওয়ার রুমের ভূমিকা, উঠছে সেই প্রশ্নও। কেন এত ভিড় দেখেও রেল পুলিশকে সতর্ক করা হল না, কেন এত অসংরক্ষিত টিকিট ইস্যু বন্ধ করা হল না, উঠছে এই ধরনের নানা প্রশ্ন। এর মাঝেই গোটা ঘটনার তদন্ত করার জন্য উত্তর রেলের প্রিন্সিপাল চিফ সিকিউরিটি কমিশনার পঙ্কজ গাঙ্গওয়ার ও প্রিন্সিপাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার নর সিংকে নিয়ে দুই সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাঁরা সব সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠিয়েছেন।
বেশ কিছুটা দেরিতে হলেও ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে আসরে নামে রেল। স্টেশনে পৌঁছয় আরপিএফ, জিআরপিএফ, দিল্লি পুলিশ, দমকল, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট। আহত ও নিহতদের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ। অত্যন্ত গুরুতর তিনজন আহতকে আড়াই লাখ টাকা করে, ও কম আহত ১২ জনকে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করা হয়। প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, সমাজের অন্যান্য বিশিষ্টরাও শোকবার্তা জানান।
প্রতিবেদনের শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছিল যে, কুম্ভ স্পেশাল ট্রেনের কারণে যে অব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, তার আন্দাজ দুর্ঘটনার সকালেই জানিয়েছিল সংবাদ প্রতিদিন। যে খবর সংবাদমাধ্যমের কাছে আছে, তা কেন রেলের উচ্চপদের আধিকারিকদের কাছে থাকল না, উঠছে সেই প্রশ্ন। যার জেরেই ১০ হাজারেরও বেশি যাত্রী একসঙ্গে পৌঁছে যান প্ল্যাটফর্মে। প্রবল ভিড়ের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, দুটি কুম্ভগামী ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যার জেরে প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস দেখামাত্রই যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে সেই ট্রেনে উঠতে যান। ফলে দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়। খবর পেয়েই রেল পুলিশ এবং দিল্লি পুলিশের দল নয়াদিল্লি স্টেশনে যায়। কিন্তু তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। শুরুর দিকে রেলের তরফে এই ধরনের দাবিও করা হয়। পদপিষ্টের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ভিড়ের ঠেলায় দমবন্ধকর পরিস্থিতির কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন, এই কথাও প্রাথমিকভাবে বলে রেল।
যাত্রী নিরাপত্তা কোথায়? কুলি, প্ল্যাটফর্মে থাকা দোকানি ও স্বজন-হারানো কয়েকজনের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, ঘটনার সময় স্টেশনে ছিলেন না কোনও আরপিএফ কর্মী। এত বড় ভিড়কে যার ফলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবই হয়নি। দেশের সবথেকে ব্যস্ত স্টেশন নয়াদিল্লি। যার প্রতিটি কোনায় রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। কুম্ভের কারণে রেলভবনের ওয়ার রুম থেকে লাগাতার নজরদারি চলছে বলেই দাবি রেলের। সেক্ষেত্রে কী ছিল ওয়ার রুমের ভূমিকা, উঠছে সেই প্রশ্নও। কেন এত ভিড় দেখেও রেল পুলিশকে সতর্ক করা হল না, কেন এত অসংরক্ষিত টিকিট ইস্যু বন্ধ করা হল না, উঠছে এই ধরনের নানা প্রশ্ন। এর মাঝেই গোটা ঘটনার তদন্ত করার জন্য উত্তর রেলের প্রিন্সিপাল চিফ সিকিউরিটি কমিশনার পঙ্কজ গাঙ্গওয়ার ও প্রিন্সিপাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার নর সিংকে নিয়ে দুই সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাঁরা সব সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠিয়েছেন।
বেশ কিছুটা দেরিতে হলেও ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে আসরে নামে রেল। স্টেশনে পৌঁছয় আরপিএফ, জিআরপিএফ, দিল্লি পুলিশ, দমকল, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট। আহত ও নিহতদের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ। অত্যন্ত গুরুতর তিনজন আহতকে আড়াই লাখ টাকা করে, ও কম আহত ১২ জনকে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করা হয়। প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, সমাজের অন্যান্য বিশিষ্টরাও শোকবার্তা জানান।
প্রতিবেদনের শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছিল যে, কুম্ভ স্পেশাল ট্রেনের কারণে যে অব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, তার আন্দাজ দুর্ঘটনার সকালেই জানিয়েছিল সংবাদ প্রতিদিন। যে খবর সংবাদমাধ্যমের কাছে আছে, তা কেন রেলের উচ্চপদের আধিকারিকদের কাছে থাকল না, উঠছে সেই প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.