সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপাকে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী সুরেশ কুমার খান্না। বুলন্দশহরে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরেই তিনি বলেছিলেন আমরা কখনই অপরাধমুক্ত উত্তরপ্রদেশ গড়ে তোলার আশ্বাস দিইনি। এরপরেই একজন মন্ত্রী কীভাবে এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন? সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিতর্ক দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক মহলেও।
উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় আসার পরেই যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন জানিয়েছিল, রাজ্যে অপরাধের পরিমাণ একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু সেই কথাই যে সার, ফের একবার সেটার প্রমাণ মিলল। বুধবার জেওয়ার-বুলন্দশহর হাইওয়েতে একদল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতি চারজন মহিলাকে গণধর্ষণ করে এবং এক ব্যক্তিকে গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই ব্যক্তি। ঘটনার পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আদিত্যনাথের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী সুরেশ কুমার খান্নার এক বিবৃতিতে বলেন, পুলিশ সব জায়গায় মোতায়েন করা সম্ভব নয়, কোনও সরকারই অপরাধমুক্ত সমাজ তৈরি করতে পারবে না। সুরেশ খান্নার এই বক্তব্যের পরেই উঠেছে বিতর্কের ঝড়।
ঠিক কী বলেছেন যোগী আদিত্যনাথের মন্ত্রী। জানা গিয়েছে, ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ খুবই বড় রাজ্য। গোটা রাজ্যকে পুরোপুরি অপরাধমুক্ত করে দেওয়া হবে, এরকম কোনও আশ্বাস কখনও দেওয়া হয়নি। তবে আমরা এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেব।’ এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ে তোলাটা কখনই সম্ভব নয়। তবে আগের সরকারের মতো বিজেপি সরকার সমাজবিরোধীদের কখনও আশ্রয় দেবে না।’
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাত দেড়টার সময় দিল্লি থেকে ৬৮ কিলোমিটার দূরে জেওয়ারে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাটি ঘটে৷ জেওয়ার-বুলন্দশহর হাইওয়ে ধরে বুলন্দশহরে যাচ্ছিল একটি পরিবার৷ গাড়িতে ছিলেন চার মহিলা-সহ পরিবারের আটজন৷ দেড়টা নাগাদ আচমকাই ছ’জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী গাড়িটি ঘিরে ধরে৷ গাড়িটি থামাতে বাধ্য হন চালক৷ দুষ্কৃতীরা টেনে-হিঁচড়ে বের করে ওই চারজন মহিলাকে৷ চালককে গান পয়েন্টে রেখে লুঠ করা হয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা ও গয়নাগাঁটি৷ পুলিশ সূত্রে খবর, ওই পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৪৪ হাজার টাকা নগদ লুট করা হয়৷ তারপরই রাস্তায় ফেলে দুষ্কৃতীরা ধর্ষণ করতে শুরু করে মহিলাদের৷
তাঁদের চিৎকারে বাঁচাতে ছুটে যান ৪৫ বছরের ওই ব্যক্তি৷ তাঁকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়৷ শেষমেশ তাঁকেও গুলি করে হত্যা করা হয়৷ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি পরিবারটি৷ তবে স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর করেছে স্থানীয় পুলিশ৷ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ওই চার মহিলাকে৷ পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে৷ আক্রান্তদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক ঠাকুর ধীরেন্দ্র সিং৷ মীরাটের আইজি জানিয়েছেন, দোষীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.