সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: NEET অর্থাৎ সর্বভারতীয় অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেন এই নিটের পিছনে। অথচ সেই পরীক্ষাতেই এত বড় কেলেঙ্কারি! সম্ভবত দুর্নীতির অঙ্কটা কয়েক হাজার কোটির। অন্তত একেক জায়গা থেকে যা যা অভিযোগ আসছে, তা একত্রিত করলে সেটাই দাঁড়ায়।
শনিবারই বিহার সরকারের আর্থিক দুর্নীতি বিভাগ একটি অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, নিট পরীক্ষার দুর্নীতির মূল অনেক গভীরে। প্রায় পরিকল্পিতভাবে ছন্দবদ্ধ দুর্নীতি। যার বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। বিহার সরকারের আর্থিক দুর্নীতি বিভাগ শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পরীক্ষার্থীদের তলব করেছিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তাতে তারা জানতে পেরেছে, নিটের একেকটি প্রশ্নপত্রের দাম ১৫ লক্ষ টাকা থেকে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হত। শুধু তাই নয়, প্রশ্নের উত্তর লিখে দেওয়ার জন্য ‘সলভার গ্যাং’-ও তৈরি হয়েছিল। তাঁদের জন্য আবার আলাদা করে ১০-১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হত।
একাধিক সূত্রের দাবি, নিটের কেলেঙ্কারির কয়েকটি স্তর রয়েছে। প্রথমত প্রশ্ন বিক্রি। বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে বা পরীক্ষার আগে সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মে গ্রুপ বানিয়ে প্রশ্ন বিক্রি করার ‘অফার’ দেওয়া হত। একেকটি প্রশ্নের দাম ১৫-৩০ লক্ষ। অর্থাৎ চারটি বিষয়ের প্রশ্ন কিনতেই লাগত ৬০-৮০ লক্ষ। এর পর কাজ সলভার গ্যাংয়ের। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পরও যদি কোনও পরীক্ষার্থী আত্মবিশ্বাসী না হন, তাহলে তাঁকে উত্তর লিখে দেওয়ার জন্য রয়েছে সলভার গ্যাং। পরীক্ষাকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে এই সলভার গ্যাংয়ের লোকেরা উত্তরও লিখে দিতেন। সেজন্য দিতে হত বাড়তি ১৫-২০ লক্ষ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থীকে মেডিক্যালে সুযোগ পাইয়ে দিতে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ হত। এখন ঠিক কত সংখ্যক পরীক্ষার্থী নিটে পাশ করেছেন, বা আদৌ কেউ করেছেন কিনা, সেটাই তদন্তের মূল বিষয়।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, কেলেঙ্কারির জাল ছড়িয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, হরিয়ানা, গুজরাট, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক-সহ একাধিক রাজ্যে। এর নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কোচিং সেন্টার এবং পরীক্ষা মাফিয়ারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.