সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ১৫ এপ্রিল লকডাউন উঠে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষদের ঘোরাফেরা ও করোনার সংক্রমণ রুখতে পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে এই পরামর্শই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানালেন, লকডাউন উঠে গেল রাতারাতি আগের মতো সব চলতে আরম্ভ করে দিল। তা হবে না। কিছু প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে করোনা আক্রান্তদের খুঁজে বের করে সবার থেকে আলাদা করতে হবে। তারপর তাঁদের চিকিৎসা করে সুস্থ করতে হবে। তবেই করোনামুক্ত হবে ভারত।
আজ দুপুরে এই বৈঠকের কিছুক্ষণ পরেই অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খাণ্ডুর টুইটার অ্যাকাউন্ট করা একটি টুইটকে কেন্দ্র করে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়। এর জেরে কিছুক্ষণ বাদেই ওই টুইটটি ডিলিট করে দিয়ে বিষয়টি ভুলবশত হয়েছিল বলে জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে। ওই টুইটটিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ‘বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছেন, লকডাউন উঠে যাওয়া এই নয় যে রাস্তাঘাটে ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়ানো যাবে। পুরোপুরি সংক্রমণ রুখতে হলে আমাদের সবাইকে দায়িত্ববান হতে হবে। ধীরে সুস্থে স্বাভাবিক জীবনযাপনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। লকডাউন উঠে গেল আর রাতারাতি সব আগের মতো হয় গেল। তা করা যাবে না কারণ, মারণ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লকডাউন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই হল একমাত্র রাস্তা।’
অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রীর ওই টুইট ডিলিট করে দেওয়া হলেও পরে অনেকটা একই ধরনের বিবৃতি দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। জানানো হয়, কোভিড-১৯ (Covid-19) নামক এই মহামারির কবল থেকে প্রত্যেকটি ভারতবাসীকে রক্ষা করতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন করা হয়েছিল। তার সুফল মিলেছে। কিছুটা হলেও সংক্রমণ ঠেকানো গিয়েছে। তবে বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসের প্রকোপে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা চিন্তা বাড়াচ্ছে। বিজ্ঞানীরাও বলছেন যে কোনও কোনও দেশ ফের নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর আমাদের এখানে যেন এই রকম পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা নিতে হবে। কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে দেশবাসীকে বের করে নিয়ে আসা যায় তার জন্য সবাই মিলে লকডাউনের পরের বিকল্প পথ খুঁজে বের করতে হবে। তবে আগামী কয়েক সপ্তাহ, আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে নাগরিকদের পরীক্ষা করে রোগী খুঁজে বের করা। আর তারপর আক্রান্তদের সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হবে। এর জন্য প্রতিটি জেলায় একজন করে আধিকারিক নিয়োগ করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পরীক্ষাগার থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করে করোনা আক্রান্তদের আলাদাও করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক রাজ্যে করোনার জন্য যে আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে সমস্ত সরঞ্জামের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আরও অনেক চিকিৎসককে এই যুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিরও যেন অভাব না হয়। লকডাউনের জন্য অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে দ্রুত টাকা ও খাদ্য পৌঁছে দিতে হবে মানুষের হাতে। করোনা যুদ্ধে মোকাবিলা করার জন্য রাজ্যগুলি দরকার পড়লে এনসিসি ও এনএসএসের পাশাপাশি অন্য কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকেও কাজে লাগাতে পারে। এপ্রিল মাসে করোনা মোকাবিলার কাজে খরচ করার জন্য কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে ১১ হাজার কোটি টাকাও দেওয়া হবে।’
#WATCH Prime Minister Narendra Modi’s message at video conference with Chief Ministers on #COVID19 situation in the country. (Source: PMO) pic.twitter.com/H7ZU80tM1w
— ANI (@ANI) April 2, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.