নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (2024 Lok Sabha Election) আগেই ‘জোট বৈঠকে’ একে অপরকে শক্তি প্রদর্শন। আজ, সোমবার বেঙ্গালুরুতে শুরু হচ্ছে বিরোধী শিবিরের জোট প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় বৈঠক। পাটনায় প্রথম বৈঠকে যোগ দেওয়া ১৬ দলের সঙ্গে আরও আটটি দল এই বৈঠকে থাকছে। বিরোধীরা যখন তাদের শক্তি ক্রমশ বাড়াচ্ছে, পাল্টা শক্তি দেখাতে মাঠে নেমে পড়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন এনডিএ (NDA) জোটও। আগামীকাল, মঙ্গলবার এনডিএ-র বৈঠকে ২৪ শরিক দলের পাশাপাশি আরও ছ’টি দল যোগ দেবে। বিরোধীরা যেমন বেঙ্গালুরুর বৈঠকে তাদের নিজ-নিজ রাজনৈতিক অবস্থান থেকে পারস্পরিক বিরোধ মেটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তেমনই বিজেপি তাদের জোটে নতুন ও পুরনো শরিকদের টানতে চাইছে।
মঙ্গলবার বিকেলে নয়াদিল্লির অশোক হোটেলে এনডিএ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। বর্তমানে এনডিএ-র শরিক ২৪টি দলের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও, বৈঠকে যোগ দেবে এনসিপি (অজিত পাওয়ার গোষ্ঠী), লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস), হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা, রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি, বিকাশশীল ইনসান পার্টি এবং সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিহার থেকে যোগ দেবেন চার নেতা –লোক জনশক্তি পার্টির (রামবিলাস) চিরাগ পাসওয়ান, হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চার জিতনরাম মাঝি, রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির উপেন্দ্র সিং কুশওয়াহা এবং বিকাশশীল ইনসান পার্টির মুকেশ সাহনি। রবিবারই সপা-র জোট ছেড়ে এনডিএ-তে যোগ দিয়েছে ওমপ্রকাশ রাজভরের সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আচমকা এনডিএ-র বৈঠকের দরকার ছিল না। কিন্তু বিরোধী শিবির যেভাবে জোট গঠনে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে, তাতে উদ্বিগ্ন শাসক শিবির। বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে নামতে সফল হলে সমূহ বিপদ বুঝেই এনডিএ-র শক্তি প্রদর্শনে নামা। চলতি বছরের শুরু পর্যন্তও বিরোধী শিবির যে একজোট হতে পারে তা স্বপ্নেও ভাবেননি বিজেপির নেতারা। এমনকী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উদ্যোগে পাটনায় অনুষ্ঠিত বিরোধীদের প্রথম বৈঠকেও তাঁরা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছেন। বৈঠকে নানাভাবে কটাক্ষ করেছেন জে পি নাড্ডা বা অমিত শাহর স্তরের নেতারাও। তবে দিন এগোতেই রক্তচাপ বেড়েছে বিজেপির। তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যপ্রদেশের জনসভা থেকে বিরোধীদের জোট নিয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে।
বিজেপি শিবিরের মতে, বিরোধীরা যেভাবে জোটবদ্ধভাবে এগোচ্ছে, তা জনমানসে প্রভাব ফেলবে। তারা জনগণের আস্থা অর্জনে সমর্থ হবে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে নিজেদের শক্তি প্রমাণে দিল্লিতে এনডিএ-র বৈঠক, প্রকৃতপক্ষে বিজেপির ‘রণকৌশল’। শরিকের হিসাবে বিরোধীদের ২৪-কে টেক্কা দিয়ে বিজেপি ৩০টি দলকে এক টেবিলে আনতে চাইছে। তবে, তাদের মধ্যে বহু দলেরই সংসদে দু’জন বা একজন প্রতিনিধি রয়েছে। আবার এমন দলও আছে, সংসদে যাদের কোনও প্রতিনিধিই নেই। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে বিজেপির প্রাক্তন জোটসঙ্গী চন্দ্রবাবুর দল তেলুগু দেশম পার্টি এবং বাদল পরিবারের নেতৃত্বাধীন শিরোমণি অকালি দলকে জোটে ফিরে পাওয়ার জন্য বিজেপি চেষ্টা করলেও তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। চন্দ্রবাবুর তরফে সাড়া না পেয়ে সে রাজ্যের জনসেনা পার্টির পবন কল্যাণকে এনডিএ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিজেপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.