সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংস্কৃতের জন্যই কথা বলা কম্পিউটার তৈরি সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে নাসা। শনিবার এই দাবিই করলেন বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। তিনি দাবি করেন, নাসা জানিয়েছে কথা বলা কম্পিউটারের স্বপ্ন সত্যি হলে তার পিছনে প্রাথমিকভাবে সংস্কৃতের অবদান থাকবে। বিশ্বের একমাত্র বিজ্ঞানভিত্তিক ভাষা সংস্কৃতের জন্য ভবিষ্যতে এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
শনিবার বম্বে আইআইটির ৫৭ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। সেখানে গিয়ে পড়ুয়াদের সামনে বক্তব্য রাখার সময় নাসা ও সংস্কৃতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, “নাসার মত অনুযায়ী অদূর ভবিষ্যতে কথা বলা কম্পিউটার তৈরির স্বপ্ন সফল হতে পারে। আর তা যদি হয় তাহলে একমাত্র তা সম্ভব হবে সংস্কৃতের জন্যই। নাসার কথায়, সংস্কৃত হল এমন ভাষা যেখানে যেভাবে উচ্চারণ করা হয় সেভাবেই লেখা হয়। এর মতো বিজ্ঞানভিত্তিক ভাষা আর নেই।”
তিনি আরও দাবি করেন, প্রাচীনকালে ভারতে চক্র ঋষি নামে এক মহর্ষি ছিলেন। অণু ও পরমাণু সংক্রান্ত গবেষণা এবং আবিষ্কার তিনি প্রথম করেছিলেন। প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্র তৈরিতেও তাঁর প্রচুর অবদান আছে। পড়ুয়াদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুশ্রুতকেও বিশ্বের প্রাচীনতম চিকিৎসক বলে দাবি করেন মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী।
তাঁর এই বক্তব্যের পরেই বিতর্ক দেখা দিয়েছেন দেশের শিক্ষামহলে। উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া নাসার নাম করে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী কী করে এই ধরনের কথা বলেন। প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। যদিও নিন্দুকরা বলছে, এই প্রথম নয় এর আগেও বিভিন্ন ধরনের উদ্ভট মন্তব্য করেছেন ওই বিজেপি নেতা। বিগত সরকার থাকাকালীন সংসদে তাঁর একটি বক্তব্য নিয়ে বেজায় শোরগোল পড়েছিল। সংসদে দাঁড়িয়েই পোখরিয়াল মন্তব্য করেছিলেন, জ্যোতিষবিদ্যা বিজ্ঞানের চেয়ে এগিয়ে। যা নিয়ে রীতিমতো হাসির রোল পড়ে যায়।
লোকসভায় ‘দ্য স্কুল অব প্ল্যানিং অ্যান্ড আর্কিটেকচার’ বিল নিয়ে বিতর্ক চলছিল। এই নিয়ে আলোচনার সময় হরিদ্বারের সাংসদ নিশাঙ্ক বলেছিলেন, ‘জ্যোতিষচর্চার কাছে বিজ্ঞান কিছুই নয়, তুচ্ছ ব্যাপার! জ্যোতিষচর্চাই হল সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের থেকেও এটা বড় বিষয়। আমাদের সত্যিই বিষয়টি নিয়ে প্রচার করা উচিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমরা আজকাল পরমাণু বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করি। কিন্তু লক্ষ বছর আগেই কণাদ পরমাণু পরীক্ষা করেছিলেন। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জ্ঞানও অনেক দিন আগে থেকে রয়েছে আমাদের।’
তাঁর মতো বিজ্ঞানের তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সত্যপাল সিংও। তাঁর দাবি ছিল, চার্লস ডারউইনের বির্বতনবাদ বৈজ্ঞানিকভাবেই ভুল। তাই স্কুল ও কলেজের পাঠ্যবই বদলে ফেলা উচিত। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষ কোথাও উল্লেখ করে যাননি, যে তাঁরা উল্লুককে মানুষে রূপান্তরিত হতে দেখেছেন।’ তবে বিবর্তনবাদের পালটা কোনও বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অবশ্য পেশ করতে পারেননি প্রাক্তন এই দুঁদে আইপিএস অফিসার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.