সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রহ্মপুত্রের উপর দেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে ভারত৷ আগামী ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের দীর্ঘতম সেতুটির উদ্বোধন করবেন৷ ভারত-চিন সীমান্তের খুব কাছে নির্মীয়মাণ এই ব্রিজ ৬০ টনের ব্যাটল ট্যাঙ্কের ওজন বহনে সক্ষম৷ অসমের পূর্ব প্রান্তে নির্মিত এই ব্রিজ উদ্বোধনের মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রী এনডিএ সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তির উদযাপন শুরু করতে চলেছেন বলে সাউথ ব্লক সূত্রের খবর।
৯.১৫ কিলোমিটার লম্বা ঢোলা সাদিয়া ব্রিজ নির্মাণের পিছনে কিন্তু সামরিক কারণও রয়েছে৷ চিন-পাক আঁতাতে নির্মিত ইকোনমিক করিডর নির্মাণের ঘোর বিরোধী ভারত৷ কিন্তু ভারতের বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে চিন ওই বাণিজ্যিক রুট নির্মাণের কাজ স্তব্ধ করেনি৷ পাল্টা ভারতও এবার চিন সীমান্তে বাড়তি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজুত করার পথে হাঁটবে৷ অসম এবং অরুণাচল প্রদেশ এখন কৌশলগত ভাবে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিনের সঙ্গে সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হলে সামরিক সরঞ্জাম-সহ ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং সাঁজোয়া গাড়ি দ্রুত যাতায়াতে ওই সেতু খুবই সাহায্য করবে।
Modi to inaugurate India’s longest Dhola-Sadiya bridge over #Brahmaputra in Assam cn withstand weight of a 60tontank pic.twitter.com/yqkk5arlIT
— Mrityunjoy Kumar Jha (@Mrityunjoykjha) May 14, 2017
নতুন সেতুটির অবস্থান অসমের রাজধানী দিসপুর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দূরে ও অরুণাচলের রাজধানী ইটানগর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু চিন সীমান্ত থেকে আকাশপথে এর দূরত্ব মাত্র ১০০ কিলোমিটার। মুম্বইয়ের বান্দ্রা-ওয়ারলি সামুদ্রিক সেতুর চেয়েও নয়া ব্রিজটি ৩.৫৫ কিলোমিটার লম্বা৷ এতদিন তেজপুরের কাছে কালিয়াভোমরা ব্রিজ ছাড়া ৩৭৫ কিলোমিটার দূরে ঢোলা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রর উপর আর কোনও ব্রিজ ছিল না৷ নদীর দুই ধারে যাতায়াতের জন্য জলপথই ছিল একমাত্র ভরসা৷ এই নয়া সেতু অরুণাচল প্রদেশ ও অসমের সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে৷ নয়া সেতুটি সাধারণের জন্য খুলে গেলে অসম ও অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দাদের যাতায়াতে অন্তত ৪ ঘন্টা সময় বাঁচবে৷
অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল পিটিআইকে জানিয়েছেন, কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নয়া সেতুটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷ অসম ও অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দাদের পাশাপাশি ভারতীয় সেনাও এই সেতু ব্যবহার করে ভারত-চিন সীমান্তে দ্রুত ব্যাটল ট্যাঙ্ক নিয়ে পৌঁছে যেতে পারবে৷ ২০১১ সালে এই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়৷ গোটা প্রকল্পের জন্য আনুমানিক ৯৫০ কোটি টাকা খরচ হবে৷ অরুণাচল প্রদেশে কোনও অসামরিক বিমানবন্দর নেই৷ নয়া সেতুটি খুলে গেলে তিনসুকিয়ায় রেল ও ডিব্রুগড় বিমানবন্দরে পৌঁছতে সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.