সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যরাতে ফোন করে প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন ইমরান খান (Imran Khan)। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রীর সেই অনুরোধ একেবারে নাকচ করে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তাঁর সাফ কথা ছিল, আটক বায়ুসেনা উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে। তা না হলে পাকিস্তানের দিকে ৯টি মিসাইল তাক করাই আছে, বলামাত্র আছড়ে পড়বে সেদেশের মাটিতে। ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির রাতে কী কী ঘটেছিল, সেই ঘটনাবলি নিয়ে বই প্রকাশ করতে চলেছেন পাকিস্তানে নিযুক্ত তৎকালীন ভারতীয় হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়া। সেখানেই উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
২৭ ফেব্রুয়ারি সকালেই বিমান ভেঙে পড়ে সেনার হাতে বন্দি হন অভিনন্দন। সেদিনই রাতের মধ্য়ে পাকিস্তানের দিকে তাক করে ৯টি মিসাইল তৈরি করে ফেলে ভারত। যদিও এই বিষয়টি ভারতের তরফে সরকারিভাবে স্বীকার করা হয়নি কখনও। তবে বিসারিয়া জানিয়েছেন, অভিনন্দনকে আটক করার পরেই আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠান পাকিস্তানের তৎকালীন বিদেশসচিব। তাঁদের বৈঠক চলাকালীনই খবর আসে, পাকিস্তানের দিকে মিসাইল তাক করেছে ভারত। বিসারিয়ার মতে, সেই খবর পেয়েই ভয়ে কাঁপতে থাকে পাক প্রশাসন থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী।
একরাতের মধ্যেই তিনবার এই রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠায় পাক প্রশাসন। ভারতকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে যেন মিসাইল হামলা ঠেকানো যায়, তিন দেশের কাছে অনুরোধ করে সেই কথা জানায় পাকিস্তান। রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে একজনের পরামর্শেই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পাক আধিকারিকরা। মাঝরাতে বিসারিয়াকে ফোন করেন পাক হাই কমিশনার। জানিয়েছিলেন, মোদির সঙ্গে আলোচনা করতে চান ইমরান খান। কিন্তু নয়াদিল্লির তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ব্যস্ত আছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই ইমরানের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। কিছু জানানোর থাকলে সেটা হাইকমিশনারকেই জানিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এই ঘটনার পরের দিনই পাকিস্তানের সংসদে ইমরান খান জানিয়ে দেন, অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়া হবে। গোটা বিষয়টিকে শান্তিপূর্ণ বলেই দেখানো হয় পাকিস্তানের তরফে।
যদিও মিসাইল মোতায়েনের বিষয়টি সরকারিভাবে স্বীকার করেনি ভারত, কিন্তু পরে একটি জনসভায় গিয়ে পাকিস্তানকে পালটা দেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছিল মোদির ভাষণে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ওইদিন অভিনন্দনকে মুক্তি না দিলে সেটা রক্তপাতের রাত হত পাকিস্তানের জন্য। বিসারিয়া আরও জানান, এই ঘটনার পর থেকেই ভারতবিরোধী সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে পিছিয়ে আসার কথা ভেবেছিল পাকিস্তান। সেই জন্যই এই ঘটনার মাসকয়েক পরে তাঁকে ফোন করেছিলেন আইএসআই-এর এক শীর্ষকর্তা। পুলওয়ামার ধাঁচে আরও একটি হামলা হতে পারে বলেও ভারতকে সতর্ক করেছিলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.