Advertisement
Advertisement

সরকার চাইলে এনআরসি-তে নাম থাকত, অনুযোগ বাংলার মেয়ের

জাতীয় নাগরিকপঞ্জির শংসাপত্র নেই, অরুণাচল সীমান্তে গ্রেপ্তার ২৪ অসমবাসী।

Name of many Bengali married woman omitted from NRC,  fingers pointed at WB Govt
Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:August 6, 2018 10:57 am
  • Updated:August 6, 2018 12:34 pm  

মণিশংকর চৌধুরি, গুয়াহাটি:  পশ্চিমবঙ্গ সরকার চাইলে এনআরসি-র তালিকায় নাম থাকত। আক্ষেপ অসমের ধূবড়ি জেলার গৃহবধূ নিভারানি দাসের। স্বামী, শ্বশুরের নাম এলেও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছেন তিনি। বছর দশেক আগে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে অসমে চলে আসেন নিভারানিদেবী। এখন অসমই তাঁর রাজ্য।  পড়শি রাজ্যের সরকার নয়, বরং নাগরিকপঞ্জীতে না থানায় এ রাজ্যের সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ছাপোষা ওই গৃহবধূ।
তবে তিনি একা নন। তাঁর মতো বিয়ের পর অসমে সংসার করছেন কয়েক হাজার  বাঙালি মহিলা।  নাগরিকপঞ্জিতে বেশিরভাগেরই নাম নেই।

[নাগরিকপঞ্জির সিংহভাগ জুড়ে সীমান্ত লাগোয়া বাসিন্দারা, তালিকায় নেই ভূমিপুত্ররাই]

 অসমে এনআরসি-র স্টেট কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গাফিলতিতেই নাগরিকপঞ্জিতে নাম ওঠেনি অসমের বিবাহিতা মহিলাদের। এনআরসি কার্যকর করা নিয়ে যখন আলাপ আলোচনা চলছে সেই সময়ই বিবাহ সূত্রে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা মহিলাদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথি চেয়ে পাঠানো হয়। ১.৫ লক্ষ নথি পাঠানো হয়েছিল।  মাত্র ১৫ হাজার নথিতে সিলমোহর দেয় এ রাজ্যের সরকার। বাকিদের সম্পর্কে কোনও রকম সদর্থক পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই গত সোমবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তালিকা প্রকাশ হলে বেশিরভাগেরই নাম বাদ গিয়েছে।  বিপাকে পড়েছেন ওই লক্ষাধিক গৃহবধূ। বউমার নাম না আসায় বিড়ম্বনার মুখে শ্বশুরবাড়ির লোকজনও। শুধু পশ্চিমবঙ্গবাসীই নয়, নাগরিকপঞ্জিতে নেই ৫০ শতাংশ হিন্দি-ভাষীর নাম। এঁদের বেশিরভাগ বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও মণিপুরের লোক। এনআরসি ইস্যুতে অসমে রাজনৈতিক চাপানউতোর বেড়েই চলছে। খোদ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের ভাইপোরও নাম নেই নাগরিকপঞ্জিতে। এনআরসি-র স্টেট কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার দাবি, নাগরিকপঞ্জির জন্য যখন রাজ্যবাসীকে প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার কথা বলে হয়েছিল, তখন প্রশাসনের কাছে নথি জমা দেননি তাঁরা। অথচ এনআরসি প্রক্রিয়াকে বদনাম করার চেষ্টা চলছে। এমনও অভিযোগ তুলেছেন প্রতীক হাজেলা। অন্যদিকে এনআরসি নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে অসমের বিজেপির বিধায়ক শিলাদিত্য দেবের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই এই অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় নগাঁও থানায় বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। লিখিত অভিযোগটি জানিয়েছেন নগাঁওয়ের ইসলামপট্টি এলাকার এক বাসিন্দা।

Advertisement

[নিজভূমে পরবাসী, ২১ দিন শিলচরের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক যুবক]

অন্যদিকে এনআরসি-র শংসাপত্র চেয়ে প্রতিবেশী রাজ্যের সীমান্তে হেনস্তার ঘটনা ঘটছে। সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে রয়েছে ডিব্রুগড়ের অসম অরুণাচল সীমান্ত। এখানকার কানুবাড়ি চেকপোস্টেই গত তিনদিনে গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৪ জন। এঁরা প্রত্যেকেই কাজের সূত্রে অসম থেকে অরুণাচল যাচ্ছিলেন। চেকপোস্টের নিরাপত্তার দায়িত্তে রয়েছেন কানুবাড়ি পুলিশের ইনচার্জ। তাঁর নেতৃত্বে একটি দল অসম থেকে আগত বাসিন্দাদের নথি পরীক্ষা করছিল। তখনই তাঁদের কাছে এনআরসি-র সংশাপত্র চাওয়া হয়। কিন্তু সেই অর্থে নাগরিকপঞ্জির তো কোনও সংশাপত্র হয় না। তাই দাবিমতো নথি দেখাতে পারেননি ২৪ জনের কেউই। গ্রেপ্তারির পর পত্রপাঠ তাঁদের অসমে ফেরত পাঠানো হয়। মূলত চেকপোস্টের ইনারলাইন পারমিট (আইএলপি) পরীক্ষার নামেই এই রকম হেনস্তা চলছে বলে অভিযোগ। অরুণাচল পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে হেনস্তা করছে স্থানীয় কিছু ছাত্রসংগঠনও। স্বভাবতই বাড়ছে ক্ষোভ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement