সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভূত কীসে ডরে? ঈশ্বরে না মন্ত্র-তন্ত্রে?
সাধারণত ভূত তাড়ানোর যে সব পদ্ধতি শোনা যায়, তার বেশির ভাগই ভর করে থাকে আধিদৈবিক পথে। আবার, সনাতন ভারতীয় ধারণা বলে অশরীরীরা শারীরিক দৃশ্য দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সেই স্থান ত্যাগ করে। নগ্নতা না কি তারা সহ্য করতে পারে না। এই কারণেই ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যে জায়গা করে নিয়েছে মৈথুন দৃশ্য।
কিন্তু, ১৯৯০ সাল থেকে কর্ণাটক অবলম্বন করেছে এক অদ্ভুত পথ। কর্ণাটকের অনেক বাড়ির দরজাতেই বড় বড় করে লেখা থাকে ‘নালে বা ভূতম’।
অবিশ্বাস্য হলেও ১৯৯০ সালটা কর্ণাটকের পক্ষে বেশ গা শিউরে ওঠার মতো। জানা যায়, ওই সাল থেকে আচমকাই রাজ্যে শুরু হয় এক আধিভৌতিক উপদ্রব। রাতের বেলা দরজায় টোকা পড়ে। বাড়ির লোকের নাম ধরে ডাকে কেউ। স্বাভাবিক ভাবেই সেই ডাকে সাড়া দিয়ে দরজা খোলা হয়।
তার পর?
ঘটে যায় সেই ঘটনা যা ঘটার কথা ছিল না।
কর্ণাটক বলে, ওই নিশিডাকে সাড়া দিয়ে যাঁরাই দরজা খুলেছেন, কেউ না কি আর বেঁচে থাকেননি। দরজা খোলার পরেই প্রথমত রক্তশূন্য হয়ে যায় তাঁদের চেহারা। তার পর সেই সব হতভাগ্যদের গ্রাস করে এক দুরূহ ব্যাধি। চিকিৎসকরা অনেক পরীক্ষা করেও সেই সব ব্যক্তির অসুখটিকে চিহ্নিত করতে পারেননি। মৃত্যু তাঁদের টেনে নিয়েছে নিজের এলাকায়।
তার পর থেকেই রাত নামলে আতঙ্কে থমথমে হয়ে পড়ত কর্ণাটক। কেউ বুঝতে পারতেন না, তাঁদের নাম ধরে কেউ ডাকলে বা দরজায় টোকা পড়লে কী করা উচিত!
অবশ্য, সব সমস্যারই সমাধান থাকে। ঠিক যে রকম একটা ক্রিয়ার থাকে সমান এবং বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া!
এই সমাধানের সূত্র কর্ণাটক কোথা থেকে পেয়েছিল, তা জানা যায় না। শুধু জানা যায়, ওই নিশিডাকের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ বাড়ির দরজার উপরে লিখে রাখতে থাকেন ‘নালে বা ভূতম’! মানে, ”ভূত, আজ নয়, তুমি কাল এসো!”
এবং, তাতে কাজও হয়। যে সব বাড়ির দরজায় এই কথা লেখা থাকত, সেই সব বাড়িতে আর রাতে কোনও উপদ্রব হত না। তার পর থেকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ভূতকে প্রত্যাখ্যান করার এই সহজ পন্থা!
অবাক লাগলেও ভূতকে প্রত্যাখ্যানের এরকম পদ্ধতির কথা জানা যায় ইউরোপীয় লোকবিশ্বাসে। সেই লোকবিশ্বাস বলে, ফিরিয়ে দিলে ভূত না কি বাড়িতে ঢুকতে পারে না!
আবার প্রশ্ন উঠতে পারে, ভারতীয় ভূত এবং ইউরোপীয় ভূতের ধরন-ধারণ এক হবে?
আসলে, মানুষের মধ্য তো কোনও শ্রেণিবিভাজন থাকে না। সব জায়গার মানুষেরই থাকে একরকম কিছু স্বভাব!
ভূতের বেলাতেই বা সেটা হবে না কেন?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.