সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার হাথরাস মামলার (Hathras Rape) চার্জশিট (Chargesheet) পেশ করেছে সিবিআই (CBI)। চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ছাড়াও তফসিলি জাতি/ উপজাতির প্রতি নৃশংসতা রোধ আইনেও অভিযোগ আনা হয়েছে। টিভিতে সেই খবর দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নির্যাতিতার বাবা। একথা জানিয়ে নিহত তরুণীর এক দাদা জানাচ্ছেন, চার্জশিট থেকে খুব বেশি প্রত্যাশা ছিল না তাঁদের।
আসলে গত সেপ্টেম্বরে গোটা দেশ যখন নির্যাতিতার নৃশংস পরিণতি দেখে ফুঁসে উঠেছে, তখনই শোনা গিয়েছিল উলটো সুর। উঠে এসেছিল ‘অনার কিলিং’য়ের দাবি। সেকথা জানিয়ে নির্যাতিতার আরেক দাদা জানাচ্ছেন, প্রতিবেশীরা ও গ্রামের বাকিরা সকলেই সেই সময় তাঁদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন। এমনকী জেলাশাসকও। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা আমাকেই অভিযুক্ত করছিল। আমিই নাকি বোনকে খুন করেছি। বলছিল এটা অনার কিলিং ছাড়া কিছু নয়। তবে এবার আমাদের আশা অভিযুক্তরা দ্রুত শাস্তি পাবে।’’
মামলার চার্জশিটকে ন্যায়ের পথে প্রথম ধাপ বলে মনে করছেন তিনি। জানাচ্ছেন, অনেক লড়াই লড়তে হয়েছে তাঁদের পরিবারকে। বিশেষ করে প্রশাসনই যেখানে তাঁদের বিশ্বাস করছিল না, তাই যুদ্ধটা ছিল রীতিমতো শক্ত। তবে চার্জশিটেও গণধর্ষণ ও খুনের উল্লেখ থাকাতেই কিছুটা স্বস্তি। নির্যাতিতার দাদা জানাচ্ছেন, ‘‘এবার চূড়ান্ত ন্যায়ের অপেক্ষা। সেজন্য আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকব। তারপরই সত্যিটা পুরোপুরি প্রমাণিত হবে।’’ এদিকে যেভাবে জোর করে নির্যাতিতার শেষকৃত্য করেছিল পুলিশ প্রশাসন, সেটা আজও ভুলতে পারেনি তাঁর পরিবার। নির্যাতিতার জামাইবাবুর দাবি, জেলাশাসকের জন্যই এটা হয়েছিল। ওঁর পদত্যাগ করা উচিত।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরাসের দলিত যুবতীকে চার যুবক গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। গণধর্ষণের পরে যুবতীর উপরে বীভৎস অত্যাচারও করা হয়। এর ফলে তাঁর শরীরে নানা জায়গায় হাড় ভেঙে যায়। সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। পরে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় গর্জে ওঠে গোটা দেশ। দোষীদের দ্রুত বিচার করে শাস্তি দেওয়ার দাবিতে মুখর হয় সবাই। এরই মধ্যে নির্যাতিতার বাবাকে জোর করে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে যোগী সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে দাবি করে হাথরাসের তরুণীর ধর্ষণই হয়নি। স্রেফ রাজ্য সরকারে বদনাম করতে ও হিংসা ছড়াতেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সেই অভিযোগ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বকলমে খারিজ করে দিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.