সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংকটে দীর্ণ পাঞ্জাব অ্যান্ড মহারাষ্ট্র কোঅপারেটিভ (পিএমসি) ব্যাংক। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও গ্রাহকদের আতঙ্ক কাটছে না। দুশ্চিন্তায় যেমন অনেক গ্রাহকের রাতের ঘুম উঠে গিয়েছে, তেমনই গত সপ্তাহেই ব্যাংকের এক গ্রাহকের মৃত্যুও হয়েছে। পিএমসি ব্যাংকে তিনি ৯০ লক্ষ টাকা জমা রেখেছিলেন। সেই অর্থ ফেরত পাবেন কি না, তা নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন সঞ্জয় গুলাটি নামের গ্রাহক। একপ্রকার আতঙ্কগ্রস্থ হয়েই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এধরনের ঘটনা দেখে স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন জাগে, আমাদের যেসব ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যদি তার অবস্থাও পিএমসি ব্যাংকের মতো হয়! তাহলে কী হবে? কত অর্থ আপনাকে ফেরত দেবে ব্যাংক?
যে কোনও সময় যে কোনও কারণে দেউলিয়া হতে পারে ব্যাংক। সে কথা মাথায় রেখেই একটি বিশেষ বিমার ব্যবস্থা করেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক বা আইবিআই। যে পরিষেবা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া আছে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশনের (ডিআইসিজিসি) কাঁধে। কী সুবিধা রয়েছে এই বিমায়? যদি ব্যাংক বন্ধ বা দেউলিয়া হয়ে যায় কিংবা কোনও কারণে আরবিআই তার লাইসেন্স বাতিল করে দেয়, তাহলে গ্রাহকরা তাঁদের সঞ্চিত অর্থের ইনস্যুরেন্সের টাকা ফেরত পাবেন। তা আপনি সেই অর্থ ফিক্সড ডিপোজিটই করে থাকুন কিংবা সেভিংস অ্যাকাউন্টই হোক, কোনও সমস্যা নেই।
এই বিমার আওতায় রয়েছে প্রায় সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, বেসরকারি ব্যাংক এবং কো-অপারেটিভ ব্যাংক। বিমার জন্য গ্রাহককে আলাদা করে ডিআইসিডিসি-কে প্রিমিয়াম দিতে হবে না। ব্যাংকই গ্রাহকের হয়ে প্রিমিয়াম ভরবে। সেক্ষেত্রে তাহলে কত অর্থ ফেরত পাবেন আপনি? ব্যাংকে যত টাকাই গচ্ছিত রাখুন, সর্বাধিক এক লক্ষ টাকাই ফেরত পাবেন আপনি। বাকি টাকা কোনওভাবেই ব্যাংক থেকে আদায় করা যাবে না। কিন্তু কেন এমন ব্যবস্থা? আসলে,
১৯৬৮ সালে চালু হওয়া বিমাটির সেই সময় ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৫০০০ টাকা। ১৯৭০ সালে আইন সংস্কারের পর তা বেড়ে হয় ১০ হাজার টাকা। ১৯৭৬ সালে তা পৌঁছায় ২০ হাজার টাকায়। চার বছর পর সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার নিয়ম চালু হয়। ১৯৯৩-এ শেষবার আইন সংস্কারের পর সেই ঊর্ধ্বসীমা হয় এক লাখ টাকা। কিন্তু এরপর গত ২৬ বছরে এখনও ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যা গ্রাহকদের কাছে দুশ্চিন্তার। এবিষয়ে আরবিআই কোনও পদক্ষেপ করে কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.