সুলয়া সিংহ, অযোধ্যা: রামমন্দিরের (Ram Temple) উদ্বোধন শুধুই যে হিন্দু আবেগের সফল বাস্তবায়ন, তা তো নয়। অযোধ্যার এই পবিত্র মন্দিরের ছোট-বড় কাহিনি যত, ঠিক ততই তার আশেপাশে তৈরি হতে থাকা গল্পের সংখ্যা। রাম জন্মভূমিতে ঘুরে সেসব মণিমুক্তো থেকে পাওয়া গেল এমন এক কাহিনি, যা সাধারণ হয়েও ঠিক সাধারণের স্তরে আটকে থাকেনি। কোনও ধর্ম, কোনও রাষ্ট্রের রক্তচক্ষুর ভয়ে নয়, সম্পূর্ণ নিজের ভক্তি থেকেই রামমন্দির সংলগ্ন জমি দান করেছেন অযোধ্যাবাসী (Ayodhya) নুর আলম। মন্দিরে আসা পুণ্যার্থীরা পেট ভরাবেন নুরের জমিতে তৈরি লঙ্গরখানা থেকেই। রাম জন্মভূমিতে নুরের এই কাজ যেন পবিত্রতার আরেক পরশ।
আসুন আলাপ করি বছর পঞ্চাশের নুর আলমের সঙ্গে। অযোধ্যার বাসিন্দা তিনি। পেশায় কাঠের কারবারি। নিজের কাঠ কারখানা রয়েছে। তাঁর আরেক পরিচয়, ভিন ধর্মের হয়েও তিনি রামভক্ত। নুরের বাড়ি নবনির্মিত রামমন্দিরের ঠিক লাগোয়া। সেখানে তাঁর বেশ খানিকটা জমিও আছে। মন্দির নির্মাণের পর রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের (Ram Janmabhumi Trust) সচিব চম্পত রায় নুরকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, মন্দির লাগোয়া সেই জমিটি যদি দেওয়া হয়, তাহলে সেখানে একটি লঙ্গরখানা তৈরি হবে। আর রামমন্দিরে আসা পুণ্যার্থীদের কাছে তা হবে নিকটতম খাওয়াদাওয়ার জায়গা।
নুর নিজেও একজন রামভক্ত। তাই চম্পত রায়ের অনুরোধ ফেলতে পারেননি। স্বেচ্ছায় নিজের ফাঁকা জমিটি লঙ্গরখানার (Langar) জন্য দান করেছেন। শুধু তাই নয়, নুর নিজে লঙ্গরখানা তৈরি করবেন, পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে তৈরি হবে বসার জায়গা, শৌচালয়। রোজ দু হাজার মানুষের রান্না হবে নুরের লঙ্গরখানায়। তবে খাওয়াদাওয়ার খরচ দেবে রাম জন্মভূমি ট্রাস্ট।
নুরের কথায়, ”অনেকেই হয়ত ভাবছেন, রামমন্দিরের তরফে আমার উপর চাপ তৈরি করা হয়েছিল এই জমি দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেসব একেবারেই নয়। আমি নিজে রামভক্ত। স্বেচ্ছায় নিজের জমি লঙ্গরখানার জন্য দিয়েছি। আমি চাই, এখানে পুণ্যার্থীরা এসে খাওয়াদাওয়া করুন।” অর্থ নয়, জাঁকজমক নয়, প্রচারের অতিরিক্ত আলো নয়। নুর আলমের মতো আরও হাজার নুরের এই দানেই আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে অযোধ্যার রাম জন্মভূমি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.