সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গরুপাচারকারী সন্দেহে মোদির রাজ্য গুজরাটে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের বনসকাঁটা জেলায়। মৃত যুবকের নাম মিশরিখান বালোচ, বাড়ি ওই জেলার সেসান নভা গ্রামে। রাজ্য সংখ্যালঘু সংগঠনের দাবি, গণপিটুনি দিয়ে ওই যুবককে খুন করেছে গোরক্ষকের দল। যদিও সে দাবি অস্বীকার করেছে স্থানীয় পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার পশু কেনাবেচার বাজার থেকে ২ মহিষ কিনে নিজের গাড়ি নিয়ে ফিরছিলেন মিশরিখান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হুসেন খান নামে তাঁর গ্রামের আর এক ব্যক্তি। ফেরার পথে তাদের গাড়ির চাকা পাংচার হয়। সেই সুযোগ নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন যুবক হামলা চালায় তাদের উপর। লোহার রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় মিশরিখানকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মিশরির। হামলাকারীদের হাত থেকে কোনওমতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন হুসেন। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশের কাছে হুসেন জানিয়েছেন, ‘মহিষ নিয়ে যাওয়ার সময় পাচারকারী সন্দেহে বেশ কয়েকজন যুবক তাদের হুমকি ও গালাগাল দিতে থাকে। কোনওমতে সেখান থেকে তাঁরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেই সময়ে তাদের গাড়ির চাকা পাংচার হয়। হামলাকারীদের হাত ছাড়িয়ে কোনওমতে পালিয়ে যাই আমি। তবে মিশরি পালাতে পারেনি। গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে।’
এই ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ (Police) স্থানীয় ৫ যুবকের বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে। ৫ অভিযুক্তের মধ্যে ইতিমধ্যেই ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ৩ জনের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। তবে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গুজরাটের (Gujarat) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। সংখ্যালঘু সংগঠনের দাবি, গণপিটুনি দিয়ে ওই যুবককে খুন করেছে গোরক্ষকের দল। এই ঘটনায় গণপিটুনি ও খুনের মামলা রুজুর দাবি জানানো হয়েছে। তবে পুলিশ এই ঘটনায় গণপিটুনির অভিযোগ দায়ের করতে নারাজ পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে বনসকাঁটার পুলিশ সুপার অক্ষয়রাজ মাকওয়ানা বলেন, এটি কোনও সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয়, নিছক একটি খুনের ঘটনা। গণপিটুনির কিছু হয়নি। আমরা তদন্ত করছি। তবে গরু পাচার সন্দেহে এহেন খুনের ঘটনা দেশে প্রথমবার নয়। এর আগে একইরকম ঘটনা ঘটেছিল কর্নাটক রাজ্যেও। সে বার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক গো ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে একদল স্বঘোষিত গোরক্ষক বাহিনীর বিরুদ্ধে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.