সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিভাজনের নানা ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে যেন ধর্মের বোধ ও সংজ্ঞাটিকেই গুলিয়ে দিচ্ছে৷ তবে এরই মধ্যে কিছু কিছু ব্যতিক্রমী ছবি যেন সমস্ত হতাশার মধ্যেও আশার আলো জাগিয়ে তোলে৷ ফের একবার সামনে এল সেরকমই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অসাধারণ একটি ছবি। সৌজন্যে মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলার বাসিন্দা সালিম।
সামনেই বিয়ে। বন্ধুদের তো নিমন্ত্রণ করতে হবে। আর তাই নিজের হিন্দু বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করতে গিয়ে অদ্ভুত এক পন্থা অবলম্বন করলেন সালিম। প্রত্যেক হিন্দু বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করতে বিয়ের কার্ডে ব্যবহার করলেন গণেশের ছবি। গোটা ব্যাপারটিতে স্বভাবতই আপ্লুত সালিমের বন্ধুরাও। গোটা দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা ধীরে ধীরে বাড়ছে। সেখানে এই ধরনের পদক্ষেপ যথেষ্ট প্রশংসনীয়। কিন্তু এক্ষেত্রে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে সালিমের ভাই আরিফকে। তবে তাতে দমে যায়নি সালিম পরিবার। এদিকে, সালিমের বন্ধু চন্দ্রভান সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি হবে। এই সময় গোটা দেশে ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি হচ্ছে। কিন্তু সালিম ও তাঁর পরিবারের এই পদক্ষেপ ফের একবার ভারতের অখণ্ডতা এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রমাণ তুলে ধরল।’
দেখুন ভিডিও:
বিভাজনের ভেদরেখা যতই মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক, আর যে কারণেই মাথাচাড়া দিক, সম্প্রীতির এই ধরনের ছবিও কিন্তু কম নয়৷ এই কদিন আগেই মালদহে এক হিন্দু হতদরিদ্র পরিবারের যুবকের সৎকারে এগিয়ে এসেছিলেন মুসলিম গ্রামবাসীরা৷ এক গ্রামবাসী জানিয়েছিলেন, সাধারণ মানুষ ধর্ম নিয়ে এত মাতামাতি করে না৷ যদি দুটো মন্ত্র পড়াই হয়, তাতে কি ধর্ম খোয়া যাবে? ওই যুবককে তাঁরা ভাইয়ের মতোই দেখতেন৷ আর সেই ভাই শেষের দিনে সঙ্গ না দিলে যে আল্লাও তাঁদের ক্ষমা করত না বলেই মনে করেছিলেন গ্রামবাসীরা৷ অর্থাৎ কোনও ধর্মের তথাকথিত কচকচানি নয়, মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ধর্মকেই মর্যাদা দিয়েছিলেন তাঁরা৷ ঠিক যেমন হিন্দু মন্দিরের জন্য অনায়াসে পৈতৃক জমি দান করেছিল এক মুসলিম পরিবার৷ এ ছবিগুলির পাশেই উজ্জ্বল হয়ে থাকলেন এই বৃদ্ধও৷ সত্যিই যদি সকলেই এভাবে সবার ধর্মভাই হয়ে উঠতে পারেন, তবে পৃথিবীটা যে অন্যরকম হয়ে উঠবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ আর অনেক হতাশার মধ্যেও, অনেক তথাকথিক বিভাজনের কাহিনির মধ্যেও তাই ভরসা জোগায় এই সত্যিগুলিই৷
ভিডিও সৌজন্যে: এএনআই(ANI)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.