সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল: বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ঘরে মহম্মদ আলি জিন্নার ছবি রাখা নিয়ে এমনিতেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি। এরই মধ্যে আলটপকা মন্তব্য করে উত্তেজনার পারদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে সারা ভারত মুসলিম মহাসংঘের প্রধান ফারহাত আলি খান। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানেরও উচিত সকল ভারতের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করা কোনও বীরের ছবি তাদের কোনও সংস্থার দেওয়ালে টাঙানো। ফলে ভারতেও জিন্নার সমস্ত ছবি পুড়িয়ে দেওয়া। এরজন্য এক লাখ টাকা আর্থিক পুরস্কারেরও ঘোষণা করেছেন সারা ভারত মুসলিম মহাসংঘের প্রধান। যা চলতি উত্তেজনায় ঘৃতাহুতির কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ঘরে মহম্মদ আলি জিন্নার ছবি রাখা নিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকেই শুরু হয়েছে অশান্তি। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল, আলিগড় কেন্দ্র থেকে বিজেপি সাংসদ সতীশ গৌতম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যে চিঠি দিয়েছিল তা থেকে। সেখানে জানতে চাওয়া হয়েছিল ছাত্র সংসদের ঘরে কেন রয়েছে জিন্নার ছবি? যা দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে রয়েছে ওই ঘরে। এরপরে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে কিছু বহিরাগত প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করলে পরিস্থিতি চরম রূপ নেয়। বিক্ষোভ ফেটে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার উত্তেজনা রূপ নেয় পড়ুয়া ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের। পুলিসের সঙ্গে সেই সংঘর্যে এখনও পর্যন্ত গুরুতর আহত হয়েছে ২৮ জন পড়ুয়া। এরপরেই শুক্রবার থেকে সমগ্র এলাকায় জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা এবং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে শুক্রবার থেকে যোগদান করেছে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ও এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
ইতিমধ্যেই ঘটনার আইনগত তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়দ মন্ত্রকের কাছে আর্জি জানিয়েছেন আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তারিখ মানসুর। গুরুতর আহত ২৮ জন পড়ুয়াকেও দেখেছেন তিনি। এতকিছুর পরেও যে ছাত্র সংসদের ঘর থেকে মহম্মদ আলি জিন্নার ছবি সরানো হবে না তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র ওমর পীরজাদা। তিনি জানিয়েছেন যে, আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে জিন্নার ওই ছবির। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে সম্মানজনক সদস্য পদ দিয়েছিল। ফলে এই ইতিহাস মুছে ফেলা হবে না বলে স্পষ্ট করেছেন ওমর পীরজাদা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.