সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গে দু’দলের ‘দোস্তি’ ভালই জমেছে। ত্রিপুরাতেও কমবেশি সমঝোতা করে চলছে বাম-কংগ্রেস (Congress)। আর জাতীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে তারা একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু কেরলে আবার কংগ্রেস এবং বামেদের মধ্যে ‘কুস্তি’ চরমে। তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, খোদ সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগ করছেন। যে সুর এতদিন শোনা যেত বিজেপির মুখে, এখন সেই সুর শোনা যাচ্ছে পিনারাই বিজয়নের (Pinarayi Vijayan) মুখেও। তিনি বলছেন, কেরলের কংগ্রেস নেতৃত্বকে নিয়ন্ত্রণ করছে মুসলিম লিগ। সামান্য ভোটের জন্য সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে কংগ্রেস।
আগামী বছরই কেরলে বিধানসভা নির্বাচন। যাতে কিনা বামেদের সঙ্গে সরাসরি লড়াই কংগ্রেসের। বিজেপি কেরলে সামান্য শক্তি বাড়ালেও এখনও মূল লড়াইয়ে তারা আসতে পারেনি। কিন্তু গেরুয়া শিবির বাম বিরোধী ভোটে যে অনেকটা ভাগ বসিয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। সদ্য স্থানীয় নির্বাচনেই তার প্রমাণ মিলেছে। পঞ্চায়েত এবং পুরসভার নির্বাচনে বিরোধী ইউডিএফের থেকে অনেকটাই বেশি আসন পেয়েছে শাসক এলডিএফ। বাম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ (LDF) যেখানে ১০ হাজার ১১৪টি আসনে জিতেছে, সেখানে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ (UDF) জিতেছে ৮ হাজার ২২টি আসনে। বিজেপির দখলে গিয়েছে ১ হাজার ৬০০টি আসন। আসলে, কেরলে দীর্ঘদিন ধরেই ৫ বছর অন্তর সরকার বদলের রীতি চলে আসছে। অথচ এবার পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে তেমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। বরং দেখা যাচ্ছে বামেদের শক্তি অটুট রেখে বিরোধী পরিসরে জায়গা করে নিয়েছে বিজেপি। শক্তিক্ষয় হয়েছে কংগ্রেসের। অথচ, গতবছরই লোকসভা নির্বাচনে ২০টির মধ্যে ১৯টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ।
মাত্র এক বছরে এত শক্তিক্ষয় কেন? তার কারণ আবার বাতলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন নিজে। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছেন তিনি। বিজয়ন বলছেন,”লজ্জাজনক ভাবে সামান্য কিছু ভোটের জন্য সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে কংগ্রেস। রাজনীতিতে এটা খুব বিরল যে একটা দল অন্য আরেকটা দলের নেতৃত্ব কে দেবেন সেটা নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু এই ধরনের অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপই হচ্ছে ইউডিএফে। বোঝাই যাচ্ছে কংগ্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করছে মুসলিম লিগ। তাহলে কি ওরাই ইউডিএফের কেন্দ্রে? ওরাই ঠিক করবে কংগ্রেসের নেতৃত্ব কে দেবে?” বিজয়নের অভিযোগ, কেরলের কংগ্রেস নেতারা কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে জোট করেছে।
কংগ্রেস আবার পালটা তোপ দেগেছে। কেরলের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা আবার বলছেন, কংগ্রেস নয়, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বামেরাই করছে। রাজ্যে বিজেপি প্রান্তিক শক্তি হওয়া সত্ত্বেও বামেরা বিজেপিকে প্রধান বিরোধী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.