সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দড়িতে ঝোলানো একটার পর একটা বই৷ দাওয়ায় বসে গুটিকয় অল্পবয়সি পড়ুয়া৷ আর তাদের সামনে বই হাতে নিয়ে পড়াচ্ছে এক খুদে ‘শিক্ষিকা’৷ ভোপালে এক বস্তির সামনে গেলে দেখা মেলে এমনই এক আশ্চর্য দৃশ্যের৷
অদ্ভুত এই লাইব্রেরিটির মালকিন ছোট্ট মুসকান আহিওয়ার৷ ব়্যাকে সাজানো সারিসারি বইয়ের চেনা ছবির সঙ্গে তার লাইব্রেরিকে মেলানো যায় না৷ তা সম্ভবও নয়৷ কেননা বস্তিতে থাকা মুসকানের পরিবারের কতটুকুই আর সামর্থ্য! কিন্তু সাধ্য যাই হোক না কেন, সাধে খামতি নেই৷ ইচ্ছেডানায় ভর করেই তাই তৈরি করে ফেলেছে এই ছোট্ট গ্রন্থাগার৷ তার লাইব্রেরির সব বই-ই সে পেয়েছে রাজ্য শিক্ষা কেন্দ্রের তরফে৷ নিজে বই পড়তে ভালবাসে৷ আর তার থেকেও ভালবাসে পড়াতে৷ আর তাই যে বস্তিতে পড়াশোনার বালাই প্রায় নেই, সেখানের পরিবেশটাই বদলে দিয়েছে খুদে ‘শিক্ষিকা’ মুসকান৷
এখন তার ক্লাস করতে সাগ্রহে হাজির হয় তার থেকে বড় প্রতিবেশীরাও৷ তাদের পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে নিজের স্কুলের পড়াও তৈরি করে নেয় সে৷ এমন মহৎ কাজে বাবা-মাকে সবসময় সঙ্গে পেয়েছে মুসকান৷ বলছে, “আমি খুব খুশি৷ বাবা-মা, বন্ধুরাও খুশি হয়েছে৷ ১২১টা বই দিয়ে লাইব্রেরিটা শুরু করে ছিলাম৷ এখন এখানে অনেক বই৷ প্রায় ৫০ জন এখানে পড়তে আসে৷ যারা এখনও আসে না, তাদের বলব তোমরাও এস৷ বলব বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে৷”
মুসকানের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগের জন্য দিল্লির এনআইটিআই আয়োগের তরফে তাকে ‘থট লিডার’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে৷ রিও ওলিম্পিকে ব্রোঞ্জজয়ী সাক্ষী মালিকের হাত থেকে শুক্রবার ওই পুরস্কার নেয় মুসকান৷ বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চায় সে৷ শিক্ষাই হল সমাজকে পাল্টে ফেলার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার৷ সাফল্য পেতে নেলশন ম্যান্ডেলার এই বাণীকেই জীবনের মন্ত্র করেছে খুদে ‘শিক্ষিকা’ মুসকান৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.