সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুদিন আগেই ডিজিটাল গ্রেপ্তারি নিয়ে সতর্ক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও মুম্বইতে এক মাস ধরে প্রতারিত হলেন এক বৃদ্ধা। ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ফাঁদে পড়ে খোয়ালেন সাড়ে তিন কোটি টাকা। পুলিশের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত এটিই দীর্ঘতম ‘ডিজিটাল গ্রেপ্তারি’ তথা প্রতারণার ঘটনা।
সাধারণত প্রতারকদের ‘সফট টার্গেট’ হন প্রবীণরা। এক্ষত্রেও ব্যতিক্রম হল না। ৭৭ বছরের বৃদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত স্বামীর সঙ্গে মুম্বইয়ের একটি আবাসনে থাকেন। দম্পতির দুই সন্তান বিদেশে থাকেন। এই সুযোগ কাজে লাগায় প্রতারকরা। গত সেপ্টেম্বর মাসের ঘটনা। অচেনা নম্বর থেকে বৃদ্ধার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন আসে। নিজেকে পুলিশ বলে দাবি করে এক পুরুষকণ্ঠ জানায়, তাইওয়ানে পাঠানো বৃদ্ধার একটি পার্সল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই পার্সেলে পাঁচটি পাসপোর্ট, একটি ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড, বেশ কিছু কাপড় এবং মাদক মিলেছে। যদিও বৃদ্ধা জানান যে তিনি কোনও পার্সেল পাঠাননি! উলটে তাঁকে বলা হয়, আধার কার্ডের নম্বরের মাধ্যমে তাঁকেই শনাক্ত করা হয়েছে।
এর পরেও প্রতারণার নাটক অব্যাহত থাকে। ফোনকলটি ভুয়ো পুলিশ আধিকারিকের কাছে স্থানান্তরিত করা হয়। এর পরই ভিডিও কলের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধাকে ‘ডিজিটাল গ্রেপ্তার’ করা হয়। সবচেয়ে বড় কথা, এক মাস ধরে চলে এই জালিয়াতি! পুলিশকর্তা পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তি কথা বলেন বৃদ্ধার সঙ্গে। এক সময় তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিশদ বিবরণ হাতিয়ে নেওয়া হয়। দফায় দফায় এক মাস ধরে ছটি অ্যাকাউন্টে প্রায় তিন কোটি ৮০ লক্ষ টাকা পাঠান ওই বৃদ্ধা। প্রতারকের দল আশ্বস্ত করে, নির্দোষ প্রমাণিত হলে গোটা টাকাটাই ফেরত পাবেন। যদিও এক সময় বৃদ্ধা বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। যদিও তখন আর কিছুই করার ছিল না।
অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে মুম্বই পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা। ওই ছয়টি অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে চার আধিকারিককে নিয়ে একটি বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত প্রতারকদের দলের হদিশ মেলেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.