সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সলমন খানের দৌলতে ‘দাবাং’ শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। হার না মানা, অকুতোভয় কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে আমরা অনায়াসেই এই শব্দটি ব্যাবহার করে থাকি। সাধারণত, পুরুষদেরই ক্ষেত্রেই এধরনের সম্বোধন করা হয়ে থাকে। তবে সেরকমই এক ‘দাবাং লেডি’র কথা আপাতত নেটদুনিয়ায় আলোচনার শীর্ষে। তিনি এক মহিলা অটোচালক।
[আরও পড়ুন: ফের চমক অধীরের, পেতে পারেন লোকসভার আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ]
সোশ্যাল মিডিয়া মানে কি শুধুই ‘সেলফি’, ‘ফোটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা’ আর ব্যক্তিগত ব্লগ লিখন? তাঁদেরও তো কিছু বলার থাকে কিংবা ভাগ করে নেওয়ার থাকে এমন কিছু অভিজ্ঞতা যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনেক যোজন দূরে৷ ওয়েবদুনিয়ায় তেমনই একজনের গল্প ফের একবার তুলে আনল ‘দ্য হিউম্যানস অফ বম্বে’। তিনি শিরিন। মুম্বইয়ের অটোরিকশা চালক। বিচ্ছেদের মামলা চলছে শিরিনের। মা ও বোনকে হারিয়ে তিনি একলা জীবনযাপনের দৌড়ে টিকে আছেন হাসিমুখে। সম্বল শুধু ওই অটোরিকশা। ‘দ্য হিউম্যানস অফ বম্বে’র দৌলতে শিরিন এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
শিরিনের জন্ম গরিব মুসলিম পরিবারে। মা-বাবার বিচ্ছেদ দেখেছিলেন, বয়স তখন তাঁর মাত্র ১১। সেদিনের সেই ঘটনা শিরিনের মনের গভীরে দাগ কেটে গিয়েছে৷ তিনি তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, “মা-বাবার বিচ্ছেদের পর মা আবার বিয়ে করলেন। কিন্তু সে বিয়েটাও টিকল না বেশি দিন। উলটে সর্ম্পকের টানাপোড়েনের মধ্যে মা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। মাকে বাঁচাতে পারিনি। পরে বোনকেও হারালাম। একটা সময় বুঝতেই পারছিলাম না, কেন বেঁচে আছি!”
পোস্টে তিনি আরও জানান, বিয়ের পর তাঁর জীবনে কীভাবে অশান্তি বেড়েছে। তৃতীয় সন্তানের জন্মের পর ঘাড় ধাক্কা খেয়ে শিরিন বুঝেছেন জীবনটা আরও কঠিন। তিন সন্তান-সহ মুম্বইয়ের ব্যস্ত রাস্তা সেদিন তাঁকে একধাক্কায় অনেকটা বড় করে দিয়েছিল। সেদিনের সেই ঘটনাই ঘাড়ধাক্কা দিয়ে শিরিনকে অটো চালাতে শিখিয়েছে। বাচ্চাদের দায়িত্ব নিতে শিখিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাড়িতে বসেই দেখা যাবে স্কুলে সন্তানদের কার্যকলাপ, নয়া উদ্যোগ দিল্লি সরকারের]
শিরিন তাঁর পোস্টে আরও লিখেছেন, “এখন অর্থ রয়েছে। কিন্তু জীবনে পাওয়া অপমানগুলো ভুলতে পারব না। একা মহিলাকে কীভাবে জীবনযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বড় হতে হয়, সেটা জীবন আমাকে পদে পদে শিখিয়েছে।” আর পেশায় অটোচালক এই মহিলার লড়াকু জীবনের সেই অনুপ্রেরণামূলক কাহিনিই সোশ্যাল মিডিয়ায় আপাতত নেটিজেনদের নজর কেড়েছে। সেইসঙ্গে শিরিন জানালেন আরেক গোপন কথা। তাঁর যাত্রীরা তাঁকে দিয়েছেন এক অভিনব তকমা- ‘দাবাং অটোচালক শিরিন’। আর এই ‘দাবাং’ শিরিনকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.