Advertisement
Advertisement

কাসভ যেন ভিডিও গেম খেলছিল! ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা ২৬/১১-র অন্যতম সাক্ষীর

ঠিক কী কী হয়েছিল সেদিন?

Mumbai attack survivor narration

আজমল কাসভ। ফাইল ছবি।

Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:November 24, 2018 1:00 pm
  • Updated:November 24, 2018 1:00 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী সোমবারই ২৬/১১ মুম্বই হামলার দশম বর্ষপূর্তি। রক্তাক্ত সেই দিনের কথা ভাবলে এখনও শিউরে ওঠে বাণিজ্য নগরীর বাসিন্দারা। কত স্বজন হারানোর বেদনা, যন্ত্রণার ইতিহাস জড়িয়ে আছে এই দিনটার সঙ্গে। দশ বছর হয়ে গেলেও ক্ষত এখনও দগদগে আক্রান্তদের মনে। সেই দিনের বিভীষিকার কথা মনে করলেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন মুম্বই নিবাসী বাবলু কুমার দীপক। বছর বিয়াল্লিশের ওই যুবক সেদিনের ভয়াবহতার অন্যতম জীবিত সাক্ষী। তাঁর চোখের সামনেই মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস (সিএসটি) স্টেশনে গুলিতে শয়ে শয়ে মানুষকে ঝাঁজরা করে দেয় কুখ্যাত লস্কর জঙ্গি আজমল কাসভ। ঘটনার এতদিন পর সিএসটি-তে ঘোষক হিসাবে কর্মরত দীপকের অভিজ্ঞতায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। দীপকের ভাষায়, সেদিন সিএসটি-তে আচমকা AK-47 হাতে মূর্তিমান বিভীষিকার মতো আসে কাসভ। তারপর নিমেষের মধ্যে গুলিতে ঝাঁজরা করে বহু সাধারণ মানুষকে। প্রায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। জানিয়েছেন, কাসভ দেখে মনে হচ্ছিল এক ভাবলেশহীন কলেজ ছাত্র যেন ভিডিও গেম খেলছে। এতটাই নির্মমভাবে গুলি করেছিল কাসভ। আজও সে দৃশ্য ভুলতে পারছেন না দীপক।

[পাকিস্তানে ভারতীয় দূতাবাস কর্মীদের হেনস্তা, গর্জে উঠল দিল্লি]

Advertisement

তিনি সেদিনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জানান, ওইদিন সকালে তাঁর ডিউটি ছিল প্রথমে বাইকুল্লা স্টেশনে। কিন্তু দুপুর তিনটে নাগাদ ডিউটি শেষ হয়ে গেলেও কর্মীসংখ্যার অভাবে তাঁকে সিএসটি-তেও ডিউটি করতে হয়। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ মুম্বই-হায়দরাবাদ হুসেননগর এক্সপ্রেস স্টেশন ছেড়ে যেতেই পুণে থেকে ইন্দ্রায়ণী এক্সপ্রেস প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। ঠিক তখনই ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান দীপক। তারপরই গোটা প্ল্যাটফর্ম চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নিত্যযাত্রীরা হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন এবং ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে আঘাত পান। তখনই দেখা যায় কাসভ অট্টহাসি দিতে দিতে রাইফেল উঁচিয়ে গুলি ছুঁড়ে চলেছে। গুলি করার সময় কিছু একটা বলছিল কাসভ, যা বোঝা যাচ্ছিল না। এরপরই আর দেরি না করে দীপক দ্রুত নিত্যযাত্রীদের ওই প্ল্যাটফর্ম থেকে পালানোর জন্য ঘোষণা করতে থাকেন। একইসঙ্গে রেলওয়ে কন্ট্রোল রুমে ফোন করে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে দেন তিনি। কিন্তু চোখের সামনে এতগুলো মানুষকে মরতে দেখে নিরুপায় হয়ে পড়েন তিনি। নারকীয় হত্যালীলার পর আরও ২৭ ঘণ্টা স্টেশনে ছিলেন দীপক। রেলের কর্মীদের সঙ্গে হাত লাগিয়ে আহতদের শুশ্রুষা করা, তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কাজও করেন তিনি। সেদিনের সাহসিকতার জন্য পরে তাঁকে সেন্ট্রাল রেলওয়ের তরফে পুরস্কৃত করা হয়। বর্তমানে তিনি বাইকুল্লা রেল হাসপাতালে জুনিয়র ক্লার্কের পদ কর্মরত।

[কাশ্মীরে ফের নৃশংসতা, পুলিশ আধিকারিককে অপহরণ করে খুন জঙ্গিদের]

ঘটনার পর দশ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও সেদিনের কথা ভুলতে পারেননি তিনি। কোথাও কোনও বিকট শব্দ হলে, বাজি ফাটলেও আঁতকে ওঠেন দীপক। সেদিনের বিভীষিকা তাড়া করে বেড়ায় তাঁকে। সেইসঙ্গে কাসভের অট্টহাসি আজও কানে বাজে তাঁর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement