সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দশরথ মাঝিই যেন ফিরলেন সীতারাম রাজপুত হয়ে। বিহার বদলে গেল মধ্যপ্রদেশে। পাহাড় কেটে রাস্তার বদলে তৈরি হচ্ছে কুয়ো। ফারাক বলতে এটুকুই। লড়াই, উদ্যম আর ঘামের ইতিহাস সেই একই। একইভাবে একা হাতে কুয়ো খুঁড়ছেন সত্তর বছরের এক বৃদ্ধ।
[ বেহালার ছায়া বারাণসীতে, মায়ের মৃতদেহ সংরক্ষণ করে পেনশন তোলার অভিযোগ ]
মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুরের হাদুয়া গ্রাম। এমনিতেই এই অঞ্চলে জলকষ্ট তীব্র। গ্রীষ্মের দাবদাহ শুরু হলে তো আর কথাই নেই। জলের খোঁজে হন্যে হয়ে থাকেন সাধারণ মানুষ। আজীবন এই সমস্যা ভোগ করে এসেছেন সীতারাম। দিন পালটেছে। তাঁর বয়স বেড়েছে। কিন্তু কোনও পাকাপাকি সমাধান হয়নি। ফলে একদিন নিজেই সিদ্ধান্ত নেন আস্ত একটা কুয়ো খুঁড়বেন। কিন্তু কাকেই বা ডাকবেন, কেইবা এসে সাহায্য করবে! অনেক ভেবে বৃদ্ধ ঠিক করেন, একলা চলো রে…। পরে যদি কেউ এসে হাত লাগায় তো ভাল। নইলে নিজের কাজ নিজেই করবেন। শুধু ভেবেই ক্ষান্ত হননি। কাজ শুরুও করে দিয়েছিলেন। তিনি যখন কুয়ো খুঁড়তে শুরু করেন তখন তাঁর বয়স আটষট্টি। গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন, একাই। এখন বৃদ্ধের বয়স সত্তর ছুঁয়েছে। এখনও তিনি ক্লান্তিহীন। আজও তিনি কোদাল হাতে কোপ দিচ্ছেন মাটির বুকে। মাথায় করে মাটির ঝুড়ি দড়ির মই বেয়ে ফেলে দিয়ে আসছেন উপরে। দু’বছর হল, সীতারামের পণ, কুয়োর কাজ শেষ করে তবে তিনি থামবেন।
[ হিন্দু রাজার মসজিদে ইফতারের ভোজে মাতেন অমুসলিমরাও ]
সীতারামের এই জেদ অনেককেই মনে করিয়ে দিচ্ছে দশরথ মাঝির কথা। পাহাড় কেটে একা হাতে যিনি রাস্তা তৈরি করেছিলেন। ইতিহাস হয়ে আছে তাঁর সেই কীর্তি। একইভাবে কাজ করে চলেছেন সীতারামও। এলাকায় অনেকে তাঁকে বুন্দেলখণ্ডের মাঝি বলেই ডাকেন। তাতে অবশ্য তাঁর খারাপ লাগে না। তবে তাঁর একটাই আক্ষেপ, গত দু’বছরে কেউ এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। না গ্রামের লোক, না প্রশাসন। খরাপ্রবণ মাটির মতোই বৃদ্ধের রুখা ফুটিফাটা ত্বকে খেলা করে যায় আক্ষেপ। কিন্তু তারপরেই চোখে ফুটে ওঠে জেদ। জানিয়ে দেন, তিনি ক্লান্ত নন। একার লড়াই লড়বেন একাই। জল মানে তো জীবন। জীবনের খোঁজে নেমে কেউ ক্লান্ত হয় নাকি! অতএব আবার কোদাল হাতে তুলে নেওয়া, আবার মাটির ঝোড়া তোলা মাথায়। প্রায় আড়াই বছর কাটল। এখনও খুঁড়ে চলেছেন সীতারাম।
MP: 70-yr-old Sitaram Rajput from Hadua village in Chhatarpur, is single handedly digging out a well to help solve water crisis in village, which the region has been facing since last 2 & a half years, says, ‘No one is helping, neither the govt nor people of the village’. pic.twitter.com/u5dadJYrAq
— ANI (@ANI) May 24, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.