সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিভাবক হিসাবে মায়ের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তাঁর সন্তানের পদবি বেছে নেওয়ার, এমনই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এক মহিলার মামলার ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর আগে অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টেও মামলা দায়ের করেছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু তাঁর দাবিকে মান্যতা দেয়নি আদালত। বৃহস্পতিবার অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টের রায়কে খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
জানা গিয়েছে, স্বামীর মৃত্যু হওয়ার পরে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন আবেদনকারী মহিলা। প্রথম স্বামীর সঙ্গে একটি সন্তান রয়েছে তাঁর। কিন্তু সেই মহিলা চান, দ্বিতীয় স্বামীর পদবি ব্যবহার করুক তাঁর সন্তান। কারণ ওই সন্তানকে দত্তক নেবেন মহিলার দ্বিতীয় স্বামী। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিবাদ শুরু হয় আবেদনকারী মহিলা এবং তাঁর প্রাক্তন শ্বশুর-শাশুড়ির মধ্যে। সেই বিবাদ গড়ায় অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট (Andhra Pradesh High Court) পর্যন্ত। সেখানে আবেদনকারী মহিলাকে আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সন্তানের বাবা হিসাবে জন্মদাতার পদবিই ব্যবহার করতে হবে। নয়তো পদবি অবৈধ বলে মনে করা হবে। দত্তক বাবাকে ‘সৎ বাবা’ হিসাবে উল্লেখ করতে হবে।
সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন আবেদনকারী। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, “মহিলার দ্বিতীয় স্বামীর নাম ‘সৎ বাবা’ হিসাবে উল্লেখ করা অত্যন্ত ঘৃণ্য। এর ফলে সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিজের সম্পর্কে হীন ধারণা তৈরি হবে।” সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, “মা যদি চান, তাহলে সন্তানের নামের সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর পদবি ব্যবহার করতেই পারেন। এটা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। বাবার মৃত্যুর পরে একজন সন্তানের একমাত্র অভিভাবক তার মা-ই। তাই মা যদি ফের বিয়ে করেন এবং নতুন পরিবারে নিজের সন্তানকে শামিল করতে চান, সেক্ষেত্রে আইনত বাধা দেওয়া যায় না।”
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) তরফে আরও বলা হয়েছে, নামের সঙ্গে একজন মানুষের পরিচয় জড়িয়ে থাকে। একটি বাচ্চার পদবি যদি পরিবারের বাকি সদস্যদের থেকে আলাদা হয়, তাহলে সে নিজেকে সবসময় দত্তক সন্তান হিসাবে মনে করবে। তার ফলে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারবে না। তাছাড়াও বেশ কিছু অপ্রিয় প্রশ্ন উঠে আসবে পরিবারের মধ্যে। এই রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এর আগেও অভিভাবক হিসাবে বাবার সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে মাকে। এই রায়কে যুগান্তকারী বলে অভিহিত করেছেন আবেদনকারীর আইনজীবী। এর ফলে মহিলাদের অধিকার সুরক্ষিত হবে বলে আশা তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.