সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে শুরু করে বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্য। সব ক্ষেত্রেই ছবিগুলি কমবেশি একই। বিরোধীদের অভিযোগ, কৃষকদের সমস্যার সমাধানে কোনও উদ্যোগই নিচ্ছে না সরকার। দেশের অন্নদাতারা এখনও বাস করছেন সেই তিমিরেই। যদিও, বিগত কয়েক বছরে বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনের আগে আগে নিজেদের কৃষকদরদী ভাবমূর্তি জনসমক্ষে তুলে আনার বিস্তর চেষ্টা করেছিল কেন্দ্রের শাসকদল। কৃষক সম্মান যোজনার আওতায় কৃষক পরিবারপিছু সামান্য আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তা যে সামান্যই, প্রমাণ করছে মহারাষ্ট্র সরকারের দেওয়া একটি পরিসংখ্যান। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সম্প্রতি একটি পরিসংখ্যান পেশ করেছেন সে রাজ্যের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী সুভাষ দেশমুখ। যাতে বলা হয়েছে, শুধু গত ৩ বছরেই মারাঠাভূমে আত্মহত্যা করেছেন ১২ হাজার ২১ জন কৃষক।
দেশমুখ জানাচ্ছেন, যে ১২ হাজার ২১ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬ হাজার ৮৮৮ টি কৃষক পরিবারের সরকারি সাহায্য পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু, তাঁরা যথাসময়ে সাহায্য পাননি। মৃত্যুর পর ৬ হাজার ৮৪৫ টি পরিবারকে এক লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এই পরিসংখ্যান শুধু ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত এই তিন বছরের। এবছরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ৬১০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। এদের মধ্যে ১৯২ জন কৃষকের সরকারি সাহায্য পাওয়া উচিত ছিল। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কৃষকদের আত্মহত্যার কারণ পারিবারিক হলেও, অধিকাংশক্ষেত্রেই তা আর্থিক।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, খরা, অসময়ের বৃষ্টি এবং খারাপ আবহাওয়ার জন্য কৃষকদের ফসল নষ্ট হচ্ছে। যার জেরে ঋণদাতাদের ঋণ শোধ করতে পারছেন না তাঁরা। তাছাড়া মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা জোগাড় করতে না পারা, কোনও উৎসবে পরিবারকে উপহার কিনে দিতে না পারার গ্লানি, এসবই কৃষক আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। মোট কথা, সবকিছুর মূলেই রয়েছে আর্থিক অনটন। সরকারি উদ্যোগ ছাড়া যার সমাধান সম্ভব নয়। যদিও মহারাষ্ট্র সরকারের দাবি, কৃষক সমস্যা মেটাতে একাধিক পদক্ষেপ করেছেন তাঁরা। কৃষিঋণ মকুব থেকে শুরু করে ফসল বিমা সবই করানো হচ্ছে। তা সত্ত্বেও কৃষকদের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। অনেকে বলছেন, এর জন্য দায়ী স্থানীয় স্তরে ছোটখাটো নেতাদের দুর্নীতি। কারণ যাই হোক, মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পরিসংখ্যান সরকারের ঘুম কাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.