সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত (North India)। উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীরের মতো রাজ্যগুলি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা হিমাচল প্রদেশের। সেখানে গত কয়েক দিনে বৃষ্টিতে (Heavy Rain) মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের। আট জন এখনও নিখোঁজ। আহত ৯২ জন। সব মিলিয়ে গোটা উত্তর ভারতে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০০ জনের। ব্যাপক বৃষ্টির আশঙ্কায় মঙ্গলবার দিল্লিতে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে যমুনার জলস্তর।
সংবাদ সংস্থার খবর, হিমাচলে গত কয়েক দিনে ৩৯ জায়গায় ধস, মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আর ২৯টি হড়পা বানের ঘটনায় ৭৮৫.৫১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টির জেরে মাণ্ডিতে বিপাশা নদীর জলস্তর বেড়েছে। নদীর ধারে বাড়িগুলি থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। হিমাচল প্রদেশে মান্ডি, কিন্নর এবং লাহুল-স্পিতিতে ইতিমধ্যেই বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৌসম ভবনের তরফে মঙ্গলবার হিমাচলের প্রায় সব অংশেই ভারী বৃষ্টিপাতের লাল এবং কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এখনই বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই নেই হিমাচলের। হিমাচলের সোলান জেলার বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র পরওয়ানুতে জলের তোড়ে রাস্তা থেকে ভেসে গিয়েছে একের পর এক গাড়ি। খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া আগামী কয়েক দিন রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার কথা বলে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্যে উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। জানা গিয়েছে, হড়পা বানে মানালিতে বহু দোকান, এবং কুলু, কিন্নর এবং চাম্বাতে যানবাহন ভেসে গিয়েছে। কসোলে নদীর জলের স্রোতে একটি যাত্রীবাহী বাস ভেসে গিয়েছে।
পরিস্থিতিও বেহাল উত্তরাখণ্ডের। বুধবার পর্যন্ত সেখানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গত দু’-তিন দিনে উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি এবং বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি মঙ্গলবার চারধামের তীর্থযাত্রীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। দিল্লিতেও মঙ্গলবার কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যমুনার জলস্তর প্রত্যাশিত সময়ের আগেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। নিচু এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
হরিয়ানায় বৃষ্টির জন্য ধস নেমে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। পিঞ্জোরে তিন জন এবং কার্নালে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আম্বালার অদূরে চমন বটিকা কন্যা গুরুকূলে আটকে রয়েছে ৭৩০ পড়ুয়া। দিল্লির মেয়র শেলি ওবেরয় মঙ্গলবার রাজধানীর সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার তৈরি আছে বলেও জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.