স্টাফ রিপোর্টার: সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট জমা বা বদল করা যাবে না সোমবার এই মর্মে এক নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷ তবে একইসঙ্গে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহকদের সাপ্তাহিক ২৪ হাজার টাকা তোলার ক্ষেত্রে কোনওরকম বাধা নেই বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিয়েছে৷
এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডিস্ট্রিক্ট সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলি ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট জমা বা বদল করতে পারবে না৷ তবে এই সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে যাতে টাকার জোগান অটুট থাকে সেদিকেও নজর রেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷ অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে বলে দেওয়া হয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিযাতে প্রয়োজন মতো টাকা তুলতে পারে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে৷ একইসঙ্গে সাপ্তাহিক সর্বোচ্চ ২৪ হাজার টাকা তোলার যে সীমারেখা সাধারণ গ্রাহকদের ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেই নির্দেশ অন্য ব্যাঙ্কে থাকা সমবায় ব্যাঙ্কগুলির নিজস্ব অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে কার্যকরী হবে না সেকথাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে৷
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এইধরনের নির্দেশের কারণ কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন জেলা ও গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা সমবায় ব্যাঙ্কগুলির অধিকাংশতেই এখনও অনলাইন ব্যবস্থা চালু হয়নি৷ ফলে কোন অ্যাকাউন্টে কত টাকা জমা পড়ছে বা কে জমা দিচ্ছে তা সঙ্গে সঙ্গে অর্থমন্ত্রকের আয়কর দফতরের পক্ষে জানা সম্ভব হচ্ছে না৷ যা সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে সম্ভব৷ মূলত কালো টাকার উপর নজরদারি রাখতে প্রায় চার বছর আগে সমস্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের সার্ভারগুলিকে আয়কর দফতর নিজেদের নজরদারির আওতায় নিয়ে এসেছিল৷ কিন্তু অনলাইন ব্যবস্থা চালু না থাকায় সমবায় ব্যাঙ্কগুলি এই নজরদারির অনেকটাই বাইরে৷ সেই সুযোগ কালো টাকার কারবারিরা নিতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই নির্দেশিকা৷ যদিও এই বিষয়ে সোমবার রাতে রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “ডিস্ট্রিক্ট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বদল করতে চাইছে না এই অভিযোগ পেয়েছি৷ যদি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা আসে তাহলে সমবায় আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ চাষিদের স্বার্থ খর্ব হবে৷”
বিষয়টি নিয়ে রাতেই সমবায় দফতরের প্রধান সচিবের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী অরূপ রায়৷
এদিকে, গত ১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, নোট বাতিলের ঘোষণার পরই জনধন যোজনায় খোলা বিভিন্ন ‘জিরো ব্যালান্স’ অ্যাকাউন্টে আচমকা বহু টাকা জমা পড়ার হদিশ মিলেছে৷ কোনও কোনও অ্যাকাউন্টে তিন কোটি টাকাও জমা পড়েছে বলে অর্থমন্ত্রক জানতে পেরেছে৷ এই বিষয়টিও যে তাদের নজরে রয়েছে তা এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ সোমবার তিনি জানিয়েছেন, জনধন অ্যাকাউন্টে আচমকা বিপুল পরিমাণ টাকা জমা হওয়ার একাধিক অভিযোগ আমরা পেয়েছি৷ আমাদের মনে হচ্ছে ওই অ্যাকাউন্টকে অপব্যবহার করার চেষ্টা হচ্ছে৷ এইধরনের কারবার ঠেকানোর জন্যই প্রথম দিকটায় ‘রেশনিং’ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.