নন্দিতা রায়: উরির সেনাছাউনিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েই চলেছে ভারত৷ দু’দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনার জেরে যে কোনও সুষ্ঠু আলোচনা সম্ভব নয়, সেটাই ভারত মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছে৷ আগামী নভেম্বরে ইসলামাবাদে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা৷ ভারত মঙ্গলবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সীমান্তপারের সন্ত্রাস ও তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ক্রমাগত নাক গলানোর ফলে শান্তিপূর্ণ ও ফলপ্রসূ আলোচনার পরিবেশ নেই৷ তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই সম্মেলনে যাবেন না৷ সম্মেলনে পৌরোহিত্য করার কথা নেপালের৷ এদিন এক বিবৃতিতে বিদেশমন্ত্রক জানায়, ‘সীমান্তপারের জঙ্গি হামলা ক্রমশ বাড়ছে৷ যা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি বিঘ্নিত করছে৷ পাশাপাশি, সার্ক সদস্য রাষ্ট্রগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে একটি দেশ নানাভাবে নাক গলাচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও ফলপ্রসূ আলোচনা সম্ভবপর নয়৷ তাই ভারত সরকারের তরফে কোনও প্রতিনিধি নভেম্বরে ইসলামাবাদে প্রস্তাবিত সম্মেলনে অংশ নিতে পারছে না৷’
উল্লেখ্য, ভারতের তরফে প্রধানমন্ত্রীর ইসলামাবাদ যাওয়ার কর্মসূচি ছিল৷ কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলির জেরে সার্ক অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনে যাননি অরুণ জেটলিও৷ ভারত শুধু নিজেদের কথাই বলেনি৷ প্রতিবেশী কয়েকটি দেশও যে সার্ক সম্মেলন বয়কট করার পথে হাঁটছে, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে পাকিস্তানের উপর বাড়তি চাপ তৈরির চেষ্টা করেছে৷ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সার্কের অন্য কয়েকটি দেশও ইসলামাবাদের সম্মেলনে যেতে রাজি নয়৷ সেই ইচ্ছার কথা তারা জানিয়েও দিয়েছে৷ আমরা সে কথাও নেপালকে মনে করিয়ে দিয়েছি৷’ ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ, ভুটান এবং আফগানিস্তানও সার্ক সন্মেলনে যোগ দেবে না বলে জানিয়ে গিয়েছে৷
পাশাপাশি, পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশনস’-এর তকমা প্রত্যাহারের কথাও বিবেচনা করছেন মোদি৷
একইসঙ্গে ইসলামাবাদের উপর আগামিদিনে আরও চাপ বাড়াতে তাদের ‘সবচেয়ে পছন্দসই রাষ্ট্র’-এর মর্যাদা প্রত্যাহার কথা বিবেচনা করছে৷ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ বিদেশমন্ত্রক ও বাণিজ্যমন্ত্রকের আধিকারিকরা তাতে উপস্থিত থাকবেন৷ এমন কিছু যে একটা হতে চলেছে, তা বিজেপির কেন্দ্রীয় সচিব সিদ্ধার্থনাথ সিংয়ের কথাতেই বোঝা গিয়েছে৷ তিনি বলেন, “পাকিস্তানকে এফমএফএন মঞ্জুর করার বিষয় নিয়ে কেন্দ্র কূটনৈতিভাবে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷ কী পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে এখনই কিছু বলা উচিত হবে৷ পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেওয়ার জন্য সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷” উল্লেখ্য, কোনও দেশকে এমএফএন তকমা দেওয়ার অর্থ তাদের সঙ্গে যা-ই ঘটুক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক নষ্ট হবে না৷ এখন নয়াদিল্লি এই তকমা প্রত্যাহার করলে পাকিস্তানের অর্থনীতি কিছুটা ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.