ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নয়, ক্রমশ মোদি সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক বাজারে টাকার দাম কমাও। যে হারে ডলারের তুলনায় টাকার দাম কমছে তাতে খুব শীঘ্রই হয়ত টাকার মূল্যও সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার মূল্য ছিল ৬৮ টাকা ৩১ পয়সা। গতকালই রেকর্ড পতন হয়েছিল টাকার। মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার মূল্য নেমে এসেছিল ৬৮ টাকা ৪২ পয়সাতে। যা গত ১৮ মাসে সর্বনিম্ন। এখনও পর্যন্ত ডলারের তুলনায় টাকার দামের ন্যূনতম রেকর্ড ৬৮ টাকা ৮৭ পয়সা। সেটিও অবশ্য এই মোদি জমানাতেই। ২০১৬-র নভেম্বর মাসে সর্বকালের সর্বনিম্ন মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল টাকা। অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন যে গতিতে মূল্য কমছে টাকার তাতে খুব শীঘ্রই ডলারের তুলনায় সত্তরের গণ্ডিও পেরিয়ে যাবে ভারতীয় মুদ্রা।
[প্রধানমন্ত্রীকে ফিটনেস চ্যালেঞ্জ বিরাট কোহলির, কী বললেন মোদি?]
আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধিই এর মূল কারণ। গত একবছরেই আন্তার্জাতিক বাজারে ৫০ শতাংশ বেড়েছে অশোধিত তেলের দাম। গত সপ্তাহেই ব্যারেল প্রতি ৮০ টাকায় ছুঁয়েছে অশোধিত তেল। ভারতের প্রয়োজনীয় মোট তেলের ৮০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। যার ফলে অশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধি ধাক্কা দিচ্ছে টাকার দামকে। এদিকে পেট্রল-ডিজেলের ক্ষেত্রে সরকার কোনও ভরতুকি না দিলেও কেরোসিন এবং রান্নার গ্যাসে ভরতুকি দিতে হয় ।
[নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী উপসর্গ দেখা দেয়? কীভাবে মোকাবিলা করবেন?]
স্বাভাবিকভাবেই অশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ভরতুকি বাবদ বাজেটের তুলনায় অনেকটা বেশি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে সরকারের। চলতি আর্থিক বছরের বাজেট পেশের সময় কেরোসিন এবং রান্নার গ্যাসে ভরতুকি বাবদ বরাদ্দ করা হয়েছিল ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯ পর্যন্ত অশোধিত তেলের দাম যদি ব্যারেল পিছু ৭০ ডলারেও নেমে যায় তবুও আগামী একবছরে ভরতুকি বাবদ সরকারকে খরচ করতে হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, বাজেটের তুলনায় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ করতে হবে সরকারকে। এই টাকা কোথা থেকে আসবে ভাবতে গিয়ে এখন অথৈ জলে সরকারি আমলারা, তার উপরে অসুস্থতার জন্য ছুটিতে অর্থমন্ত্রী, তাই এই আশু সংকটের মোকাবিলায় এখনও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ করা সম্ভব হয়নি।
[বয়স ছুঁয়েছে সত্তর, জলকষ্ট মেটাতে তবু একা হাতেই কুয়ো খুঁড়ছেন সীতারাম]
এদিকে সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরাও। আজই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ট্যুইট করে মোদিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, কংগ্রেস সভাপতি সাফ জানিয়েছেন, দাম কমান, নাহলে দেশজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে কংগ্রেস। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার ইঙ্গিত যখন আগেই ছিল তখন সরকার কেন আগে থেকে সাবধান হয়নি, প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। এই দুরদর্শিতার অভাবে রাজনৈতিক এবং আর্থিক দু-দিক থেকেই বিপদের সামনে দাঁড় করাতে পারে গোটা দেশকে, মত রাজনৈতিক মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.