সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ইংরাজি ও হিন্দি জানো না! তাহলে তুমি পরীক্ষায় পাস করতে পারবে না।’ সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষার কোচিং সেন্টারে এভাবেই উপহাস করা হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার পারাসাম্বা গ্রামের বাসিন্দা গোপালকৃষ্ণ রোনাঙ্কিকে। বলা হয়েছিল তিনি কোনওদিনই এই পরীক্ষায় পাস করতে পারবেন না। কিন্তু সংকল্প ঠিক থাকলে যে কোনও অসাধ্য সাধন সম্ভব। সেটা প্রমাণ করেই ছাড়লেন গোপালকৃষ্ণ। ইংরেজি না জানার জন্য যে উপহাস সহ্য করতে হয়েছিল অবশেষে সেটার জবাবও দিলেন। গোটা দেশে সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষায় তৃতীয় হলেন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ৩০ বছর বয়সি গোপালকৃষ্ণ। ইংরাজি ও হিন্দিতে সমস্যা থাকলেও তেলুগু ভাষায় পরীক্ষা দিয়েই এই কৃতিত্ব অর্জন করলেন তিনি।
গরিব পরিবারের ছেলে গোপালকৃষ্ণ ছোট থেকেই আইএএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। চাইতেন নিজের রাজ্য-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গরিব মানুষদের সাহায্য করতে। এবার নিজের সেই স্বপ্নকে বাস্তবের রূপ দিতে আর কোনও সমস্যা রইল না তাঁর। স্বভাবতই এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরে খুশি তিনি। এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ছোট থেকেই মা-বাবাকে কষ্ট করতে দেখেছি। তাই তখন থেকেই সমাজ ও পরিবারের জন্য কিছু করার স্বপ্ন মনের ভিতর ছিল। আইএএস অফিসার হতে চাইতাম। সেই জন্যই আমি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলাম। পরিশ্রমের ফল অবশেষে পেলাম। এই পদটি খুবই সম্মানীয়। অন্ধ্রপ্রদেশের শিক্ষাব্যবস্থা আরও উন্নতি করার দিকেই এবার মনসংযোগ করতে চাই।’
ছোট থেকেই দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করেছেন গোপালকৃষ্ণ। তাঁর এই কৃতিত্বে রীতিমতো খুশি গোটা পরিবার। গোপালকৃষ্ণের ভাই বলেন, ‘ছোট থেকেই আমার ভাই গোপালকৃষ্ণ পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল। কিন্তু সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষার জন্য কোচিং সেন্টারে যখন ও ভর্তি হয়েছিল, তখন ইংরাজি ও হিন্দি না জানার জন্য উপহাস করে ভাইকে বলা হয়েছিল সে কখনই এই পরীক্ষায় পাস করতে পারবে না। কারণ সে হিন্দি ও ইংরাজি ভাষা ঠিকমতো জানে না। এরপরেই ভাই ঠিক করে সে পরীক্ষায় পাস করে দেখাবেই। অবশেষে তার অধ্যাবসায় তাকে এই কৃতিত্ব অর্জন করতে সাহায্য করল।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.