সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ নাবালক পড়ুয়াকে ভয় দেখিয়ে টানা কয়েক মাস ধরে পায়ুসঙ্গমের অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর অভিযোগটি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুকুলের সিনিয়র ছাত্র ও কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। রবিবার অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিত নাবালকদের অভিভাবকরা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। পাশপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছেও গোটা ঘটনা ও পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার রোহতকের লাধোত গ্রামের আবাসিক স্কুলে।
জানা গিয়েছে, গত মাস পাঁচেক ধরে স্কুলের মধ্যেই নারকীয় অত্যাচারের শিকার হচ্ছে পাঁচ খুদে পড়ুয়া। নির্যাতিতরা পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। অভিযোগ, স্কুলেরই সিনিয়র কিছু ছাত্র ও কয়েকজন কর্মী রীতিমতো ভয় দেখিয়ে তাদের সঙ্গে পায়ুসঙ্গম করছে। দিনের পর দিন ধরে চলছে অত্যাচার। নির্যাতিতরা রাজি না হলে তাদের মারধরও করে অভিযুক্তরা। এমনকী, এই খবর বাইরের কাউকে জানালে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। বলা বাহুল্য, অত্যাচার চললেও ভয়েই কাউকে কিছু জানায়নি নির্যাতিত পড়ুয়ারা। তবে রবিবার রাখি বন্ধন উপলক্ষে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে অভিভাবকরা গুরুকুলে যান। সেই সময় কিছুটা অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেই বাচ্চাদের কাছে কারণ জানতে চাইলে নাবালকরা ভেঙে পড়ে। তারপর উগরে দেয় গত পাঁচ মাসের নারকীয় অত্যাচারের বিবরণ। সঙ্গেসঙ্গেই রোহতক সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতদের পরিবার। ঘটনা প্রসঙ্গে সদর থানার পুলিশকর্তা মনজিৎ কউর জানিয়েছেন, পায়ুসঙ্গমের অভিযোগ পেয়েছি। নির্যাতিত নাবালকদের জেরা করে অনেক কিছুই জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তরা স্কুলটির সিনিয়র ছাত্র ও বেশ কয়েকজন কর্মী। তাদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪, ২০২, ৩২৩, ৫০৬, ৩৭৭ ও পকসো আইনের আওতায় মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে রোহতকে।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে জেলার শিশুকল্যাণ দপ্তরের চেয়ারপার্সন রাজ সিং সাঙ্গওয়ান বলেছেন, ‘প্রত্যেক নির্যাতিত শিশুকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে সোমবার অর্থাৎ এদিন থেকে কাউন্সেলিং শুরু হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রত্যেক পড়ুয়াকেই বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। এই মামলার যাবতীয় তদন্ত রিপোর্ট যাতে নির্যাতিতদের অভিভাবকরা দ্রুত পেয়ে যান তার ব্যবস্থা করবে শিশুকল্যাণ দপ্তর। মামলা সংক্রান্ত পুলিশ আধিকারিকদের বক্তব্যও জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে দপ্তরের তরফে। নির্যাতিত পাঁচ পড়ুয়া ছাড়াও বাকি ছাত্রদের কেউ এই নারকীয় ঘটনার শিকার কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। তাই গুরুকুলের সমস্ত নাবালক পড়ুয়ার জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিনই ঘটনার তদন্তে শিশুকল্যাণ দপ্তরের একটি দল ওই স্কুলটিতে যাবে। পরিদর্শনের সময় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এই পড়ুয়াদের গুরুতর অভিযোগে যাবতীয় তথ্যাদি জানতে চাওয়া হবে।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপনউতোর শুরু হয়েছে। ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চেয়ে সরব হয়েছে স্থানীয় কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মুখে কুলুপ এঁটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.